Road safety

পথ নিরাপত্তা বৈঠকে বিধাননগর পুলিশের তোপে পূর্ত দফতর

বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তারা চাইছে, তাদের এলাকার মধ্যে যশোর রোডকে যথাসম্ভব বিপদমুক্ত রাখতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪৯
Share:
জেলার পথ নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল বিধাননগর পুলিশ।

জেলার পথ নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল বিধাননগর পুলিশ। — প্রতীকী চিত্র।

রাস্তায় পুরু হয়ে জমে রয়েছে ধুলোবালি। দীর্ঘদিনের না-কাটা জঙ্গল বেড়ে চলে এসেছে রাস্তায়। যার জেরে গাড়িচালকদের দৃষ্টিপথে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। পথ-বিভাজিকা ভেঙে গিয়েছে। ইচ্ছেমতো সেখান দিয়ে লোকজন পারাপার করছেন। দীর্ঘদিন ধরে বলা সত্ত্বেও পূর্ত দফতর সে দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। কার্যত এমন ভাবেই জেলার পথ নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিল পুলিশ।

Advertisement

যশোর রোডের উপরে গত এক মাসে পথ দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। সব ক’টি ঘটনাই ঘটেছে বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে দোলতলার মধ্যে। যার মধ্যে ছ’টি ঘটনাই ঘটেছে বিধাননগর কমিশনারেটের বিমানবন্দর থানা এলাকায়। একটি ঘটনা ঘটেছে মধ্যমগ্রাম থানা এলাকায়। ওই ছ’টি মৃত্যুর ঘটনায় পথ নিরাপত্তার নিরিখে প্রশ্ন উঠেছিল বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে। যাবতীয় দুর্ঘটনার পিছনে কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি পুলিশকে হতে হয়েছে, তা মঙ্গলবারের বৈঠকে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকেরা। এমনকি, তাঁরা সামগ্রিক সমস্যা পূর্ত দফতরকে বার বার জানানো সত্ত্বেও কোনও ফল হয়নি বলেই এ দিনের বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বলে খবর। যদিও পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আজ সবাই মিলে বৈঠকে বসা হয়েছিল। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। রিপোর্ট তৈরি হবে। তার পরে যা করণীয়, সবটাই করা হবে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত এক বছরে যশোর রোডে এক নম্বর গেট এলাকা থেকে মাইকেলনগর অবধি রোড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোনও পর্যালোচনা হয়নি বলে এ দিন বিধাননগরের ট্র্যাফিক বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। এ দিনের বৈঠকে পুলিশ ও পূর্ত দফতর ছাড়াও জেলা পরিবহণ দফতর, দমদম, উত্তর দমদম-সহ একাধিক প্রশাসনিক সংস্থা উপস্থিত ছিল। তাদের কাছে রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতেও অনুরোধ করেছে পুলিশ।

Advertisement

সূত্রের খবর, বার বার দুর্ঘটনার পরে বিধাননগরের ট্র্যাফিক বিভাগের তরফে জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে জানানো হয়েছিল যে, পথ নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পূর্ত দফতরের কাছে নানাবিধ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। তার পরে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে এ দিন সব দফতর বৈঠকে বসে। সব দফতরের প্রতিনিধিরা বিরাটি, মাইকেলনগর, বি টি কলেজের মতো যশোর রোডের জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন।

বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তারা চাইছে, তাদের এলাকার মধ্যে যশোর রোডকে যথাসম্ভব বিপদমুক্ত রাখতে। তাই এ বার তিন নম্বর গেট থেকে দোলতলার মধ্যে সার্ভিস রোডের উপরে বাস থেকে যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থা করার কথা ভাবছে তারা। গাড়ি চলাচলের রাস্তার উপরে বাস থেকে যাত্রীরা ওঠানামা করেন এখন। যে কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানো লরির ধাক্কায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই পথচারীর মৃত্যু হয়। সার্ভিস রোডকে ছোট ছোট দূরত্বে ভাগ করে সেই পথে বাসকে বড় রাস্তায় ওঠানোর পরিকল্পনাও করছে পুলিশ। বর্তমানে গত এক সপ্তাহ ধরে অটোযাত্রীদের ওঠানামা করার জন্য সার্ভিস রোড ব্যবহার করা হচ্ছে ওই তল্লাটে। পুলিশের তরফে পূর্ত দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে, যাতে বাইক দুর্ঘটনা ঠেকাতে ওই সব রাস্তায় জমে থাকা বালির স্তর পরিষ্কার করা হয় এবং চালকদের দৃষ্টিপথ উন্মুক্ত রাখতে পথ-বিভাজিকা ও রাস্তার প্রয়োজনীয় জায়গার জঙ্গল পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement