প্রতি বারই ডেঙ্গির মোকাবিলায় তৎপরতা জুলাই থেকে শুরু হয়। তবে এ বার এখন থেকেই নাগরিকদের মধ্যে প্রচার শুরু হয়েছে। ফাইল ছবি।
সময় হয়নি আসার। কিন্তু তার চরণধ্বনি যেন শোনা যাচ্ছে। গত বছরে চার-পাঁচ জনের মৃত্যুর স্মৃতি টাটকা। এ বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিধাননগরে ডেঙ্গি আক্রান্ত সাত জন। তাই মশার আঁতুড়ঘর তৈরির পরিবেশ কোথায় রয়েছে, বিধাননগর পুরসভার তরফে এলাকায় সেই খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে।
গত বছর ডেঙ্গিতে বিধাননগরে এক শিশু-সহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে এক জন ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছিলেন। তিনি বাইরে থেকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বিধাননগরে মারা যান ধরে নিয়ে পুরসভা গত বছরের মৃত্যুর সংখ্যা চার বলে দাবি করে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতি বারই ডেঙ্গির মোকাবিলায় তৎপরতা জুলাই থেকে শুরু হয়। কিন্তু এ বার এখন থেকেই বাড়ি ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে নাগরিকদের মধ্যে প্রচার শুরু হয়েছে। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আরআরটি (র্যাপিড রেসপন্স টিম) তৈরি করা হচ্ছে। চলতি এপ্রিল থেকেই সেই দল কাজ শুরু করবে। বিধাননগর পুরসভায় ছ’টি বরোর অধীনে ৪১টি ওয়ার্ডের জন্য ১০টি আরআরটি দল তৈরি থাকবে। যাদের মধ্যে সব ধরনের কর্মীর পাশাপাশি থাকবেন এক জন পতঙ্গবিদও।
গত বছর ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনাগুলির নিরিখে স্বাস্থ্য দফতর বিভিন্ন এলাকাকে ডেঙ্গিপ্রবণ বলে চিহ্নিত করেছিল। সেই সব ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলির জন্য দু’টি করে আরআরটি দল বরাদ্দ করা হয়েছে। বাকি এলাকাগুলির জন্য একটি করে আরআরটি দল থাকবে। ডেঙ্গির খবর পেলেই দলটি সেই জায়গায় গিয়ে স্প্রে করা-সহ নানা ধরনের কাজ করবে।
বিধাননগরে দু’বছর ধরে ড্রোন উড়িয়ে ডেঙ্গির মশার সন্ধান করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, বহু বাসিন্দার বাড়ির উপরেই রয়েছে বাগান। সেই সব বাগানে জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভাও পেয়েছিল পুরসভা। তার পরে অবশ্য কোনও কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া যায়নি। তার মধ্যে বহু বাসিন্দা বাড়িতে পুরকর্মীদের ঢুকতে দিতে চান না বলেও অভিযোগ। এই মানসিকতার বিরুদ্ধে কখনওই পুরসভা কঠিন হতে পারেনি।
এক পুরকর্তা জানান, এই সমস্যা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। প্রতি বছরেই যে ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হয়, তাতে পুরসভাকে কাজ করতে না দিলে সমস্যা বাড়বে। তিনি বলেন, ‘‘এ বার ভাবা হয়েছে, পুরকর্মীদের সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। কোনও বাসিন্দা তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে না দিলে সেই বাড়িকে বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পাশাপাশি, এ বার ডেঙ্গির মরসুম শুরুর অনেক আগে থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্লিনিকগুলির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। যাতে তারা ডেঙ্গির সময়ে পজ়িটিভ রিপোর্ট সম্বন্ধে পুরসভাকে অবগত করে।