অপরিষ্কার: সল্টলেকের একটি পড়ে থাকা জমিতে খোঁড়া হয়েছে কুয়ো। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও জমে জঞ্জাল। কোথাও বসে গিয়েছে নার্সারির ব্যবসা। কোথাও আবার ফাঁকা জমিতেই গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি। সেই সব জমির অধিকাংশই নগরোন্নয়ন দফতরের। ডেঙ্গির মরসুমে এই ধরনের ফাঁকা জমির দিকে নজর দিতে নগরোন্নয়ন দফতরকে অনুরোধ করল বিধাননগর পুরসভা। ওই পুরসভার তরফে হিসাব, এগারোশোর বেশি এমন জমি আছে নগরোন্নয়ন দফতরের। সমস্যা এড়াতে ওই সব জমির কিছু কিছু নিলামে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ডেঙ্গির মোকাবিলায় কাজের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে বিধাননগর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগকে গত সপ্তাহেই ডেকে পাঠিয়েছিল নগরোন্নয়ন দফতর। সূত্রের খবর, সেখানে পুর কর্তৃপক্ষ নগরোন্নয়ন দফতরকে অনুরোধ করে সল্টলেকে তাদের পড়ে থাকা ফাঁকা জমিগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সল্টলেকে নগরোন্নয়ন দফতরের ১১৬৫টি ফাঁকা জমি পড়ে রয়েছে। সারা বছর ধরে ফাঁকা পড়ে থাকা ওই সব জমিতে স্থানীয়দের বড় অংশই আবর্জনা ফেলেন। অনেক সময়ে পুরসভার কর্মীরাও সেখানে জঞ্জাল ফেলে যান বলে অভিযোগ ওঠে। সল্টলেকের এই সমস্যা বাম আমল থেকেই রয়েছে। তৎকালীন বিধাননগর পুরসভা বহু চেষ্টা করেও নগরোন্নয়ন দফতরের ওই সব জমি পরিচ্ছন্ন করাতে পারেনি।
ইই ব্লকে এমনই একটি বিরাট জমি রয়েছে। ওই জমিটি ভরে রয়েছে জঙ্গলে। আশপাশের আবাসনের বাসিন্দারা জানালেন, মশার উপদ্রব সেখানে খুব বেশি। আবার ফার্স্ট অ্যাভিনিউয়ের উপরে বিবি ব্লকে এমনই একটি ফাঁকা জমিতে দেখা গেল, গাছের নার্সারির ব্যবসা চলছে। মালিক তপন গুহ ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা জানান, গত তিন বছর ধরে তাঁরা নার্সারি চালাচ্ছেন। এলাকারই এক নেতা তিন বছর আগে তাঁদের কেষ্টপুর খালের ধার থেকে সেখানে এনে বসিয়ে দিয়েছেন বলে জানান পূর্ণিমা। ভিতরে টব, পরিত্যক্ত স্নানের টাব, এমনকি কুয়ো পর্যন্ত খোঁড়া রয়েছে। পূর্ণিমার দাবি, তাঁরা কুয়োর জলে নিয়মিত ওষুধ দেন। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবার দাবি, ‘‘ওই সব নার্সারি জায়গাগুলি অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়। ছোট ছোট জলভরা কাপেও মশা ডিম পাড়ে, নার্সারির ভিতরে জল জমানোর বড় বড় আধার রয়েছে।’’
ওই সব ফাঁকা জমিতে পড়ে থাকা জঞ্জালে মশার বংশবৃদ্ধির উপকরণ মজুত থাকে বলেই দাবি পুরকর্তাদের। বিধাননগরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৬ জনের বেশি জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতর সপ্তাহ দুয়েক আগেই একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছিল পুরসভাকে।
এই সমস্যার দিকটি মেনে নিয়ে পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ওই সব জমির মধ্যে অনেকগুলির আইনি জটিলতা রয়েছে। যেগুলির তেমন সমস্যা নেই, সেগুলিই নিলাম করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফাঁকা ওই সব জমি মশার উপদ্রব বাড়াচ্ছে, এই সমস্যার বিষয়টি দফতরের নজরে আছে।’’