বেআইনি নির্মাণ নিয়ে তৎপর বিধাননগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ করে ক্রেতাকে ঠকাচ্ছেন প্রোমোটার। পুরসভা এফআইআর করলেও প্রোমোটার সহজে আগাম জামিন নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতার বাড়ির মূল্যায়ন হচ্ছে না। হচ্ছে না মিউটেশনও। এ বার বেআইনি নির্মাণ করলে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে যাতে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা যায়, তার জন্য তৎপর হচ্ছে বিধাননগর পুরসভা।
দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী বেআইনি নির্মাণ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তার পরে মঙ্গলবার বিধাননগর পুরসভা ও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে অবৈধ নির্মাণ, অবৈধ পার্কিং, পুকুর ভরাটের মতো একাধিক সমস্যার ক্ষেত্রে পুলিশকে পুরসভার সঙ্গে যৌথ ভাবে আরও বেশি করে কাজ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে পড়ার পরে নড়েচড়ে বসেছিল বিধাননগর পুরসভাও। ওই ঘটনার অনেক আগে থেকে বিধাননগর পুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ, জাল নকশায় নির্মাণের অজস্র অভিযোগ উঠেছিল। তার পরে বেশ কিছু বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়। তা-ও পুরসভার কাজ বন্ধের নোটিস উপেক্ষা করে অনেক প্রোমোটারই কাজ চালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে পুরসভা এফআইআর করে। তবে দৃষ্টান্তমূলক কোনও ব্যবস্থা কারও বিরুদ্ধে নেওয়া যায়নি।
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী জানান, বেআইনি নির্মাণকারী প্রোমোটারকে উপযুক্ত আইনি ধারার প্রয়োগে কী ভাবে আটকানো যেতে পারে, তার জন্য পুলিশের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা এফআইআর করতে পারে। কিন্তু কোন ধারায় মামলা হবে, তা পুলিশ ঠিক করবে।’’ আধিকারিকেরা জানান, প্রোমোটার বেআইনি নির্মাণ করলে সেটি ফ্ল্যাটের ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করার সমান। সেই ধারায় প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কি না, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
বেআইনি পার্কিং নিয়েও অনেক দিন ধরেই বিতর্ক চলছে বিধাননগরে। অভিযোগ উঠেছে, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের মদতেই বিধাননগর পুর এলাকার বহু জায়গায় বেআইনি পার্কিং তৈরি হয়ে গিয়েছে। ব্রডওয়ের ধারে, করুণাময়ী, বিকাশ ভবন এলাকায় বেআইনি পার্কিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, সেখানে পুলিশ ও পুরসভার অনুমোদনক্রমে পার্কিংয়ের ১৭টি জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে পুরসভা অনুমোদিত ন’টি পার্কিংয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।
একই সঙ্গে রাস্তা ও ফুটপাত দখলের সমস্যা সমাধানে দখলদারদের নিয়ে সমীক্ষা, ভেন্ডিং ও নন ভেন্ডিং জ়োনের তালিকা তৈরি নিয়েও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।