—ফাইল চিত্র।
ফাঁকা জমি, পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তায় জমে থাকা জঞ্জাল ও ঝোপজঙ্গল সাফাইয়ে বিশেষ জোর দিতে চলেছে বিধাননগর পুরসভা। ডেঙ্গির এই মরসুমে কোথাও যাতে কোনও ভাবেই জল জমে না থাকে, সে দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি ওয়ার্ড কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভা জানিয়েছে, ডেঙ্গি প্রতিরোধ কী ভাবে করা যায়, তা ঠিক করতেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদই মশাবাহিত রোগ, বিশেষত ডেঙ্গির প্রকোপ সব চেয়ে বাড়ে। গত কয়েক বছরে বিধাননগরের অসংখ্য বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। গত বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ১৬৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার সেই সংখ্যাটা ১৫।
এ বারের পরিস্থিতি অবশ্য আলাদা। গোটা প্রশাসনই করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত। তার মধ্যেই মশা নিয়ন্ত্রণে স্প্রে করার পাশাপাশি বাসিন্দাদের সচেতন করতে প্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে পুরকর্তারা এটুকু বুঝেছেন যে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ঢিলেমি দিলেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
তাঁরা জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা বা পরিত্যক্ত বাড়ি ও ফাঁকা জমিতে গজিয়ে ওঠা ঝোপজঙ্গল দ্রুত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালপাড় থেকে শুরু করে বহু ফাঁকা জমিতে ঝোপজঙ্গল রয়েছে। সেখানে অনেকে আবর্জনাও ফেলেন। পুরসভার ছ’নম্বর ওয়ার্ড থেকে এমন অভিযোগ উঠেছে। সেখানে খালপাড়েই জঙ্গলের মধ্যে তৈরি হয়েছে জঞ্জালের স্তূপ। যদিও পুরসভার দাবি, বর্জ্য পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া চালু হতে সেই প্রবণতা কমছে। বিধাননগরে বিভিন্ন উদ্যান ও ফোয়ারায় জমে থাকা জলও নিয়মিত পাল্টানোর দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সেই কাজ শুরু হয়েছে বলেই পুরসভার দাবি।
পুরকর্তারা জানান, বিধাননগরের সংযুক্ত এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাস্তায় অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়িতে জল ধরে রাখা হয়। সে সব ক্ষেত্রে জল ঢাকা দিয়ে রাখা হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাত দিন বা ১৫ দিন অন্তর বিশেষ অভিযান চালানো হবে। এ বছর বিধাননগরে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর উপরে ডেঙ্গি হানা দিলে বিপদ বাড়বে। তাই ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।