স্রেফ প্রোমোটারের দেওয়া নকশার ভিত্তিতে বিধাননগর পুর এলাকায় মিলবে না ব্যাঙ্ক ঋণ। ফাইল চিত্র।
স্রেফ প্রোমোটারের দেওয়া নকশার ভিত্তিতে বিধাননগর পুর এলাকায় মিলবে না ব্যাঙ্ক ঋণ। প্রয়োজন হবে পুরসভার শংসাপত্র বা ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’-এর। নকল কিংবা জাল নকশার ভিত্তিতে বহুতল নির্মাণ ঠেকাতে এমনই কঠোর পদক্ষেপ করছে বিধাননগর পুরসভা। সূত্রের খবর, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৪টি ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়ে পুরসভা জানিয়েছে, তাদের দেওয়া শংসাপত্র ছাড়া বিধাননগর পুর এলাকায় ফ্ল্যাটের জন্য ক্রেতাদের যেন কোনও মতেই ঋণ দেওয়া না হয়।
ভাল করে খতিয়ে না দেখে বাতিল কিংবা জাল নকশার ভিত্তিতে তৈরি হওয়া ফ্ল্যাট ঋণ নিয়ে কেনার পরে বহু ক্রেতা বিপদে পড়েছেন বিধাননগর পুর এলাকায়। তাঁদের মিউটেশন আটকে গিয়েছে। প্রয়োজন হলেও সেই ফ্ল্যাট তাঁরা সহজে বিক্রি করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে মিউটেশন না হওয়ায় ওই সব বহুতল থেকে কোনও আয় হয় না পুরসভার। বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করায় গ্রেফতারিও হয়েছে। বহুতল ভাঙার নির্দেশও এসেছে। তবু কাজের কাজ কিছু হয়নি। উল্টে, একটি জনস্বার্থ মামলাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি উচ্চ আদালতে তিরস্কার জুটেছে। বেআইনি হিসাবে চিহ্নিত ৩৫৫টি বহুতলের বিরুদ্ধে পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত।
ব্যাঙ্কের পাশাপাশি দুই বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা, সিইএসসি এবং ডব্লিউবিএসইডিসিএল-কেও একই মর্মে মিটার কিংবা বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে পুরসভার ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। নির্মাণ নকশা খতিয়ে দেখে ওই শংসাপত্র পুরসভা প্রথমে প্রোমোটারকে দেবে। প্রোমোটার তা ক্রেতাকে দেবেন। ব্যাঙ্ক বা বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা প্রয়োজন হলে পুরসভার কাছ থেকেও সেই শংসাপত্রের বৈধতা খতিয়ে দেখে নিতে পারবে। পুর আধিকারিকেরা জানান, নকশা অবৈধ হলে পুরসভা শংসাপত্র দেবে না। তাতে নির্মাণ হলেও ফ্ল্যাটের মিউটেশন হবে না। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘সিংহভাগ ক্রেতাই ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কেনেন। ক্রেতারা সচেতন হলে অসাধু প্রোমোটারেরা বেআইনি নির্মাণ করতে পারবেন না। তা ছাড়া, শংসাপত্রের অভাবে মিটার না পেলে নির্মাণস্থলে বিদ্যুৎ বা জলের সংযোগও ঢুকবে না। তাই ফ্ল্যাট বিক্রিও করা যাবে না। তাই ক্রেতারা যেন নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অবশ্যই চেয়ে নেন।’’
২০১৫ সালে রাজারহাট-গোপালপুর ও বিধাননগর পুরসভাকে সংযুক্ত করে বর্তমান বিধাননগর পুরসভা (কর্পোরেশন) তৈরি হয়। ওই দুই পুরসভার সময়ের সব নকশা আগেই বাতিল হয়েছে। অভিযোগ, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় অধিকাংশ নির্মাণই বেআইনি। এই সব নির্মাণ ঠেকাতে এই নতুন পদক্ষেপ করছে বিধাননগর পুরসভা।