ফাইল চিত্র।
সংঘর্ষ ও অশান্তির যে বাতাবরণ ভবানীপুরের উপনির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েক দিনে তৈরি হয়েছে, তার জেরে নির্বিঘ্নে ভোট করাতে আরও ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বরাদ্দ হল শুধুমাত্র ওই কেন্দ্রের জন্য। বুধবার এ কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে ভবানীপুরের জন্য পাঠানো হয়েছিল ১৫ কোম্পানি বাহিনী। সেই হিসাবে এখন ওই কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ হল মোট ৩৫ কোম্পানি বাহিনী।
কমিশন সূত্রের খবর, বাড়তি যে বাহিনীকে নিযুক্ত করার কথা, তারা মূলত এলাকায় শান্তি রক্ষার বিষয়টি দেখবে। কারণ, ভবানীপুরের প্রায় সমস্ত বুথই উত্তেজনাপ্রবণ। যার মধ্যে অন্তত ১৩টি অতি উত্তেজনাপ্রবণ বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, ওই বাহিনীর একটি অংশকে ‘রিজ়ার্ভ’-এও রাখা হতে পারে বলে খবর।
কলকাতা পুলিশের সামনে এ বার অবশ্য জোড়া চ্যালেঞ্জ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার বিষয়টিও। মঙ্গলবার রাত থেকেই ঘূর্ণাবর্ত আর নিম্নচাপের জেরে হয়ে চলেছে বৃষ্টি। যার ফলে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বন্দর এলাকার বেশ কিছু অংশে জল জমেছে। ভোট শুরু হওয়ার আগে সেই জমা জল বার করাটাও চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের।
লালবাজার জানিয়েছে, ভোটে অশান্তি ঠেকাতে ভবানীপুর কেন্দ্রের ন’টি থানা এলাকায় নামানো হচ্ছে কমবেশি পাঁচ হাজার পুলিশকর্মীকে। আগে কখনও একটি কেন্দ্রের ভোটের জন্য এত সংখ্যক পুলিশকর্মীকে নামানো হয়নি বলেই সূত্রের খবর। এ ছাড়াও, ভোট প্রক্রিয়া সামলাতে থাকছে ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, যাদের মধ্যে ২০ কোম্পানিকে পাঠানো হচ্ছে প্রায় শেষ মুহূর্তে। পুলিশ জানিয়েছে, এক-একটি বুথে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর তিন জন জওয়ান। তবে বুথের বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবে মূলত কলকাতা পুলিশই। সেই কারণে ভোটকেন্দ্রিক সব রকম গোলমাল ঠেকাতে বুথের ২০০ মিটার চৌহদ্দির মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে লালবাজার। এলাকায় একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি জড়ো হতে পারবেন না। রাজনৈতিক দলের ক্যাম্পেও থাকতে পারবেন না দু’জনের বেশি প্রতিনিধি। এক পুলিশকর্তা জানান, প্রচারের শেষ দিনের হাঙ্গামার পরে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। তাই আটঘাট বেঁধেই শান্তিতে ভোট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাহিনীকে।
ভবানীপুরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৮। মোট বুথের সংখ্যা ২৮৭। প্রতিটি বুথের ভিতরেই থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, বুথের বাইরে কোনও গোলমাল বা অশান্তি হলে বাহিনী যাতে দ্রুত হস্তক্ষেপ
করতে পারে, তার জন্যই এত পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হচ্ছে। বুধবার থেকেই নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালেই লর্ড সিনহা রোডের সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল থেকে ইভিএম নিয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে তাঁদের জন্য বর্ষাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।