এই মঞ্চে (উপরে) বসানো হবে ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্যের ব্রোঞ্জ মূর্তি (নীচে)। ছবি: সুদীপ ঘোষ
রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের প্রধান কার্যালয় ভবানী ভবন নামকরণ হয়েছিল যাঁর নামে, অগ্নিযুগের সেই বিপ্লবী ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্যের মূর্তি ওই ভবনের সামনে বসার কথা আগেই হয়েছিল। কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে চলতি মাসের গোড়ায় তা বসানো হতে চলেছে।
গত বছর বিপ্লবী ভবানীপ্রসাদের ভাগ্নি লীলাবতী চক্রবর্তী ওই ভবনে তাঁর মামার একটি মূর্তি বসানোর আবেদন জানিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষকে। বর্তমানে সেখানে শুধুই প্রতিকৃতি রয়েছে। ভবানীপ্রসাদের একটি ছবিও দিয়েছিলেন লীলাবতীদেবীর জামাই ফাল্গুনী ঘোষাল। এর পরেই পুর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পার্ক ও উদ্যান দফতর মূর্তি বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। ইতিমধ্যেই ভবানী ভবনের মূল প্রবেশদ্বারের বিপরীতে রাস্তার উপরে মন্দিরের আদলে কাঠামো করা হয়ে গিয়েছে। পরিবারের থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে ভবানীপ্রসাদের ব্রোঞ্জ মূর্তি তৈরির কাজও প্রায় শেষ বলে জানিয়েছেন শিল্পী গৌতম পাল। মূর্তিটি গড়তে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
১৯৩৪ সালে তৎকালীন বাংলার রাজ্যপাল অত্যাচারী ইংরেজ শাসক জন অ্যান্ডারসনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন ভবানীপ্রসাদ। লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় বেঁচে যান অ্যান্ডারসন। তবে হত্যার ষড়যন্ত্রে ধরা পড়েন ভবানীপ্রসাদ। পরের বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে রাজশাহীতে ফাঁসি দেওয়া হয়। তথ্য বলছে, স্বাধীনতার পর থেকেই আলিপুরের অ্যান্ডারসন হাউসের নাম বদলের দাবি উঠেছিল। ১৯৬৯ সালে ভবানীপ্রসাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নতুন নাম হয় ভবানী ভবন। ফাঁসির দিনটিকে স্মরণ করে ওই সময় বা তার আগেই মূর্তি বসানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে পুর প্রশাসন।
ফাল্গুনীবাবু জানান, বছর ছয়েক আগে ভবানী ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে মামার নামাঙ্কিত ভবনটি দেখতে আগ্রহ দেখান তাঁর শাশুড়ি লীলাবতীদেবী। ভিতরে গিয়ে মামার প্রতিকৃতি দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি। আবেদন জানান মামার একটি মূর্তি বসানোর। গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি ভবানী ভবনে ভবানীপ্রসাদের স্মরণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
তখনই তাঁকে শাশুড়ির ইচ্ছের কথা জানান ফাল্গুনীবাবু। এক বছরেই সে কাজ হতে চলেছে জেনে খুশি বিপ্লবীর পরিবার।