Durga Puja 2022

পরভূমেও পুজোর পরশ ছড়াচ্ছে চেন্নাইয়ের বাঙালি সংগঠন

বাংলার প্রতিটি উৎসবেই মেতে ওঠেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বছরের অন্য সময়ে শিকড়ের টানে বঙ্গের ভিটেমুখো হলেও উৎসব-অনুষ্ঠানে চেন্নাই ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩৪
Share:

জলসা, নাটক থেকে পঙ্ক্তিভোজন— পুজোয় মিশে যায় সব কিছু। ফাইল ছবি

চিকিৎসা করাতে সারা বছরই বাংলার বহু মানুষ ছুটে যান চেন্নাইয়ে। পুজোর এই সময়টাও তাঁদের অনেককে কাটাতে হয় ওই শহরে। সেই রোগী বা তাঁদের পরিজনেরা যাতে শারদীয়া উৎসবের আমেজ থেকে বঞ্চিত না হন, প্রতি বারই সে দিকে খেয়াল রাখেন ৯৩ বছরের পুরনো ‘টি নগর বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুজো উদ্যোক্তারা।

Advertisement

জলসা, নাটক থেকে পঙ্‌ক্তিভোজন— পুজোয় মিশে যায় সব কিছু। আর শেষ দিনে ধুনুচি নাচ থেকে সিঁদুর খেলা। ওই সংগঠনের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, পুজোর সময়ে বাংলা ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে প্রবল উৎকণ্ঠায় দিন কাটানো মানুষদের মনেও প্রিয় উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের পুজো মণ্ডপ। যেখানে প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি ভোগ খাওয়া যায়। দশমীতে অংশ নেওয়া যায় সিঁদুরখেলায়।

বাংলার প্রতিটি উৎসবেই মেতে ওঠেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বছরের অন্য সময়ে শিকড়ের টানে বঙ্গের ভিটেমুখো হলেও উৎসব-অনুষ্ঠানে চেন্নাই ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। বরং যাঁদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে থাকেন, তাঁরাও চলে আসেন চেন্নাইয়ে। ১৯২৯ সালে কয়েক জন বাঙালি মিলে চেন্নাইয়ের গিরি রোডের টি নগরে তৈরি করেন ‘দ্য বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন’। বর্তমানে প্রায় ৬০০টি পরিবার এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যারা সকলে মিলে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো থেকে বসন্ত উৎসব, নববর্ষ, রাখি— সবই পালন করে।

Advertisement

সংগঠনের সভাপতি চণ্ডী মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলার প্রতিটি উৎসবই আমরা পালন করি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুর্গাপুজো। চিকিৎসা করাতে আসা মানুষেরাও আমাদের প্রতিমা দর্শনে আসেন।” চেন্নাইয়ের ওই সংগঠন থেকে গ্রিমস রোডের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। যেটিকে বলা হয়, ‘মিনি কলকাতা’। কারণ, চেন্নাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাওয়া লোকজন ওই এলাকাতেই হোটেল, গেস্ট হাউস ভাড়া করে থাকেন। তাই গ্রিমস রোডের বিভিন্ন হোটেলে প্রচার করা হয় এই দুর্গাপুজোর কথা। রাস্তায় ঝোলানো হয় ব্যানার।

পঞ্চমীতে আনন্দমেলার মাধ্যমেই শুরু হয়েছে পুজোর অনুষ্ঠান। মহিলা সদস্যদের তৈরি পিঠে, ঘুগনি, ফিশ কবিরাজি-সহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি হচ্ছে সেখানে। পঞ্চমী থেকে নবমী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে একই মৃৎশিল্পী, পুরোহিত, ঢাকি অংশ নিচ্ছেন প্রবাসী বাঙালিদের এই পুজোয়। কিন্তু মাঝে কোভিডের জন্য তাঁরা যেতে পারেননি। চণ্ডী বলেন, “পুরোহিত ও ঢাকি আসতে না পারলেও তাঁদের কিছু অর্থ পাঠিয়েছিলাম।”

সপ্তমী থেকে প্রতিদিন দুপুরে চলে পঙ্‌ক্তিভোজন। তার জন্য কলকাতা থেকেই গিয়েছেন পাচক। রসগোল্লার কারিগরও বাংলার। দশমীর বিকেলে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় মেরিনা বিচে। ধুনুচি নাচের পরে সূর্যাস্তের সময়ে বঙ্গোপসাগরে হয় প্রতিমা নিরঞ্জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement