মঞ্চে একই ফ্রেমে অভিজিত রায় এবং মা গীতা রায়
আমাদের জন্মভূমি মায়ের মতন,
রেখেছ আগলে বুকে ক’রি যে যতন।।
রত্নগর্ভা হয়ে ঢেলে দিয়েছেন
যত সব রত্ন...
রত্নগর্ভা অর্থাৎ রত্নকে গর্ভে ধারণ করেছেন যিনি। যাঁর হাত ধরেই সন্তানের পথ চলা, এবং সমাজের চিরায়িত বাস্তব প্রেক্ষাপটে নিজের ছাপ রেখে যাওয়া। যাঁরা সন্তানের গর্বে গর্বিনী, সেই সমস্ত মায়েদেরকে কুর্ণিশ জানাতে ৮ মার্চ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের তরফে আয়োজন করা হয়েছিল ‘রত্নগর্ভা’ পুরস্কার। প্রত্যেক বছরেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বদের মাকে সম্মান জানানো হয় এই পুরস্কারের মাধ্যমে। এবছরেও সমাজের এমনই ৬ জন সন্মানীয় ব্যক্তিত্বদের মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই অনন্য সম্মান।
এবছর 'রত্নগর্ভা' পুরস্কারপ্রাপকদের তালিকার মধ্যে জ্বলজ্বল করছিল গীতা রায়ের নাম। তিনি দেশের অন্যতম সেরা রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থার বার্জার পেইন্টসের সিইও অভিজিত রায়ের মা। তাঁর কথায় উঠে এল অভিজিত রায়ের ছোটবেলার গল্প। সেই গল্প কারোরই জানা হয়। — স্কুল থেকে এসেই ভলিবল খেলতে যেতেন ছোট্ট অভিজিত ওরফে বাপি। ফিরে এসেই ক্লান্ত হয়ে ঘুমের দেশে। দুষ্টুমি করলে বকাও খেতেন বেশ! এক বার ঘুড়ি ধরতে গিয়ে চোখের কোনায় দারুন চোট পেয়েছিলেন অভিজিত। কোলে নিয়ে গীতাদেবী ছুটে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে।
পাশাপাশি গীতা দেবীর কথায় উঠে এল অভিজিত রায়ের পড়াশুনার গল্পও। রোজকার দশটা-পাঁচটার চাকরি নয়, গীতা দেবীর স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবেন ছেলে। মেডিক্যালের পরীক্ষায় পাশও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্পোরেট জগতেই নিজেকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন অভিজিত রায়। ১৯৯৬-এ বার্জার পেইন্টসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তাঁর নেতৃত্বেই বার্জার পেইন্টস বিশ্বের অন্যতম সেরা রঙ প্রস্তুতকারক সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
শুধু আনুষ্ঠানিক সম্মানই নয়, মায়ের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে গলা ভার হয়ে এল অভিজিত রায়েরও। জানালেন মা ও ছেলের অজানা কত গল্প। বললেন, তাঁর জীবনের সমস্ত কিছুর নেপথ্যে একজনই রয়েছেন। এবং তিনি হলেন তাঁর মা — গীতা দেবী। মা উপদেশ দিয়েছিলেন মানুষের মতো মানুষ হওয়ার। অভিজিত কথা রেখেছেন। তাঁর পথ চলার গল্প দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা দেয়। সত্যিই তিনি বাংলা তথা দেশের রত্ন।