বেহালা

ভোটই দিইনি, ভোট পড়ে গেল!

জোকার ঢালিপাড়া চকঠাকুরানি বিদ্যালয় থেকে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে এলেন সস্ত্রীক অনল আলি সাঁপুই। ‘‘এই দেখুন আমার কার্ড ও ভোটার স্লিপ। হাতে কালি নেই। ভোটও দিইনি। বলছে ভোট পড়ে গেছে।’’ ভোট কেন্দ্রের মুখেই জটলা জনা ষাটেক যুবকের। দশ-বারোটা বাইক রাখা। অনল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন দেখে কয়েকজন এলেন। ভোটার স্লিপটা নিয়ে বাড়ি যান। রাতে বাড়ি থাকবেন তো? ভয়ার্ত মুখে বাড়ির পথে পা বাড়ালেন অনল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৫ ০০:১০
Share:

জোকার ঢালিপাড়া চকঠাকুরানি বিদ্যালয় থেকে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে এলেন সস্ত্রীক অনল আলি সাঁপুই। ‘‘এই

Advertisement

দেখুন আমার কার্ড ও ভোটার স্লিপ। হাতে কালি নেই। ভোটও দিইনি। বলছে ভোট পড়ে গেছে।’’

ভোট কেন্দ্রের মুখেই জটলা জনা ষাটেক যুবকের। দশ-বারোটা বাইক রাখা। অনল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন দেখে কয়েকজন এলেন। ভোটার স্লিপটা নিয়ে বাড়ি যান। রাতে বাড়ি থাকবেন তো? ভয়ার্ত মুখে বাড়ির পথে পা বাড়ালেন অনল। যুবকেরাও গিয়ে বসলেন তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসে। ‘নতুন’ ভোটার পাঠাতে। কলকাতা পুরসভার নতুন ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘটনা ঘটে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ।

Advertisement

দুপুরে প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে তর্ক জুড়লেন ১১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই প্রার্থী স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়— ‘‘৫০টি ভোট জাল পড়ে গেল? কিছু করছেন না?’’ স্বরূপ মজুমদার স্কুলের বাইরে জড়ো হন শ’খানেক তৃণমূল সমর্থক। ‘‘হারবে জেনে নাটক করছে। ওঁকে বার করে দিন। ভোটারদের ভোট দিতে সমস্যা হচ্ছে।’’ পুলিশের কাছে চিৎকার করতে থাকেন ওঁরা। ওই বাম প্রার্থী বেরিয়ে এলে তর্ক শুরু হয়। পুলিশ নিরাপদে স্বপ্নাকে গাড়িতে তুলে দেয়।

এগুলি বেহালা ও জোকার একুশটি ওয়ার্ডের খণ্ডচিত্র। বাস্তব ছবি, এক সময়ের বামদুর্গে কা়র্যত প্রতিরোধহীন ভোট করল তৃণমূল। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ১৩১ নম্বর থেকে মেয়র পারিষদ তারক সিংহের ১১৮ নম্বর ওয়ার্ড, তারাতলা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কারখানা বলে পরিচিত নেপালগঞ্জ— কোথাও গণ্ডগোল নেই। থাকবে কী করে? প্রতিরোধই তো নেই। রাজনৈতিক ভাবে বদলে যাওয়া বেহালার দুই বিধায়ক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায় জিতেছিলেন রেকর্ড ভোটে। লোকসভাতে তা অনেকটা অক্ষত ছিল।

শনিবার এলাকা ঘুরে মনে হয়েছে তৃণমূলের দাপট কমেনি। বুথ ক্যাম্প থেকে রাস্তা— সর্বত্র তৃণমূল সমর্থকদের ভিড়। বিজেপির দু’একটি অফিসে দু’চারজন লোক। কংগ্রেসের কোনও অফিস চোখে পড়েনি। সিপিএম-এর কিছু বুথ ক্যাম্প থাকলেও সেখানে সমর্থকেরা ঝিমিয়েছেন। ভোট করানোর তাগিদ দেখাননি।

সকালে রায়বাহাদুর রোডের জয়শ্রী স্কুলের বুথের বাইরে ছাদের চাঙড় ভেঙে পড়ে। আসে দমকল। ভোটের শেষে সেই উত্তেজনাও নেই বিরোধী শিবিরে। বেহালার ১৮টি ওয়ার্ডই গতবার ছিল তৃণমূলের দখলে। এ বার ওয়া়র্ড বেড়ে হয়েছে ২১। ভোট কাটাকাটিতে যদি ২১-০ আটকানো যায়, বাম শিবিরে চলেছে সেই আলোচনাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement