প্রতিবাদ: বনবিতানের প্রবেশপথের সামনে বিক্ষোভ প্রাতর্ভ্রমণকারীদের। সোমবার, সল্টলেকে। নিজস্ব চিত্র
সল্টলেকের বনবিতানে প্রবেশ করতে হলে অগস্টের শুরুর দিন থেকেই প্রাতর্ভ্রমণকারীদের দিতে হবে প্রবেশমূল্য, এমনটা আগেই ঘোষণা করেছিল বন দফতর। সেই মতো সোমবার প্রাতর্ভ্রমণকারীরা বনবিতানে ঢুকতে গেলে, তাঁদের বিনামূল্যে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় প্রাতর্ভ্রমণে যাওয়া লোকজনের মধ্যে। দফায় দফায় তাঁরা বিক্ষোভ দেখান।
সল্টলেকের বনবিতানে বহু বছর ধরে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ প্রাতর্ভ্রমণ ও শারীরচর্চা করতে আসেন। শুধু সল্টলেকই নয়, পার্শ্ববর্তী লেক টাউন, বেলেঘাটা, ফুলবাগানের মতো জায়গা থেকেও প্রাতর্ভ্রমণকারীরা আসেন সেখানে। বরাবরই তাঁদের বিনামূল্যে পার্কে প্রবেশের অধিকার ছিল। প্রাতর্ভ্রমণের সময় ছাড়া অন্য সময়ে বনবিতানের পর্যটকদের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রবেশমূল্য। তাই জুলাই মাসে বন দফতরের তরফে যখন প্রাতর্ভ্রমণকারীদের জন্য প্রবেশমূল্য চালুর নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, তখন থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন তাঁরা। বনবিতানে আসা পর্যটকদের জন্য এক বারের প্রবেশমূল্য ধার্য হয়েছে ১০ টাকা। সকাল ১০টার পরে যাঁরা বেড়াতে আসবেন, এক বার প্রবেশের জন্য তাঁদের দিতে হবে ৫০ টাকা। আর প্রাতর্ভ্রমণকারীরা যে হেতু নিয়মিত আসেন, তাই তাঁদের জন্য মাসিক ৩০০, ষাণ্মাসিক ১৬০০ এবং বার্ষিক ৩০০০ টাকা প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে।
এ দিন বিনামূল্যে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের পার্কে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় বনবিতানের গেটের বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়। বেশির ভাগ লোকই বনবিতানে না ঢুকে গেটের বাইরে বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁরা প্রবেশমূল্য বাতিল করার দাবি জানাতে থাকেন। সকাল ৯টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।
৮২ বছর বয়সি বিকাশেন্দু বিশ্বাসের কথায়, ‘‘১৯৯০ সাল থেকে বনবিতানে আসছি। এখন অনৈতিক ভাবে আমাদের জন্য প্রবেশমূল্য চালু করা হল। আমরা চাই, মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন।’’ প্রবেশমূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশ বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন।
বনমন্ত্রী জানান, প্রাতর্ভ্রমণকারীরা তাঁদের সমস্যার কথা তাঁকে জানিয়েছেন। ওই সংক্রান্ত ফাইল অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে থাকার কারণে বিষয়টি আমি দেখতে পারিনি। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা আমিব্যক্তিগত ভাবে দেখব। দফতরের কিছু পদে রদবদল হয়ছে। দু’-এক দিন সময় লাগবে। তবে পার্কে সান্ধ্যকালীন ভ্রমণে প্রবেশমূল্য লাগবে।কারণ, পার্কের রক্ষণাবেক্ষণেরও প্রয়োজন।’’