ফল খারাপ হওয়ায় নিরুদ্দেশ ভাইবোন, উদ্ধার

মঙ্গলবার রাতেই দু’জনকে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেয় ব্যারাকপুর জিআরপি থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় তারা বাড়ি থেকে পালায়। তাদের বাড়ি জোড়াবাগান এলাকার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রাত আটটা। বেলঘরিয়া স্টেশনে মাঝেরহাট-রানাঘাট আপ লোকাল ঢুকতেই দুই মহিলাযাত্রীর নজর পড়েছিল ওদের দিকে। ট্রেনের কামরার এক কোণে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওরা দু’জন। ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই সন্দেহ হয় দুই যাত্রীর। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই কাঁদতে শুরু করে তারা। শেষ পর্যন্ত ব্যারাকপুর জিআরপি থানায় নিয়ে গেলে জানা যায়, মায়ের বকুনি খেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া দুই ভাইবোন।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতেই দু’জনকে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেয় ব্যারাকপুর জিআরপি থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় তারা বাড়ি থেকে পালায়। তাদের বাড়ি জোড়াবাগান এলাকার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দাদার বয়স আট বছর এবং বোনের সাত। জোড়াবাগান থানার পিছনের একটি স্কুলে দু’জনেই দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। মঙ্গলবার স্কুলের ফল প্রকাশ হয়। ফল খারাপ হওয়ায় দুপুরে বাড়ি ফিরতেই মা দু’জনকে বকাবকি করেন। এর কিছু পরে মেয়ের হাতে ১০ টাকা দিয়ে পাশের দোকান থেকে কালোজিরে কিনতে পাঠান মা। বোনের পিছন পিছন বেরিয়ে যায় তার দাদাও।

Advertisement

দীর্ঘ সময় পরেও ভাইবোন না ফেরায় খোঁজাখুজি শুরু করে পরিবার। কিন্তু পাড়ায় এবং পরিচিতদের কাছে তাদের সন্ধান না পেয়ে বাড়ির লোকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। ওদের বাবা সমীর সাহা বলেন, ‘‘তখন আমাদের পাগল হওয়ার জোগাড়। ওদের কোথায় খুঁজব, কী ভাবে খুঁজব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’’

দুই মহিলা যাত্রীই ব্যারাকপুর স্টেশনের জিআরপি থানার হাতে তুলে দেন বাচ্চা দু’টিকে। প্রথমে বাবার নাম ছাড়া কিছুই বলতে পারেনি ওরা। জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় বাড়ি থেকে পালিয়েছিল ভাইবোন। পরে ফিরতে চাইলেও রাস্তা গুলিয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত ট্রেনে চড়ে। কিন্তু কোন স্টেশন থেকে, তা তারা বলতে পারেনি। অবশেষে তাদের ঠাকুমা যূথিকা সাহার মোবাইল নম্বর বলতে পারে। সেই নম্বরে পুলিশ যোগাযোগ করে। যুথিকাদেবী বুধবার বলেন, ‘‘যদি ওরা অন্য কারও হাতে পড়ত কী সর্বনাশ হত কে জানে! যাঁরা ওদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি
আমরা কৃতজ্ঞ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement