—প্রতীকী ছবি।
বিহারের বেউর জেলে বন্দি, দুষ্কৃতী সুবোধ সিংহকে জেরা করার অনুমতি পেল ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ। বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো, হামলার পরে তাঁকে একাধিক বার হুমকি-ফোন করার অভিযোগের তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার বিহারে পৌঁছন ব্যারাকপুর পুলিশের তদন্তকারীরা। প্রধান অভিযুক্ত সুবোধকে জেরা করতে চেয়ে শুক্রবার পটনা সদর আদালতে তাঁরা আবেদন করেন।
ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, পটনা আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। অনুমতির নথি নিয়ে বেউর জেলে গিয়ে সুবোধকে জেরা করার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। এ দিনই তাঁরা জেলে পৌঁছেছেন। অজয় ছাড়াও ব্যারাকপুরের বাসিন্দা আর এক ব্যবসায়ী তাপস ভগতের কাছেও যে হুমকি ফোন এসেছে, সেটিও সুবোধ করেছিল কি না, তা পরীক্ষা করে দেখবে ব্যারাকপুরের পুলিশ। সে জন্য জেরা করার পাশাপাশি, সুবোধের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে খবর।
বেলঘরিয়ার ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড-সহ একাধিক রাজ্যে সুবোধের দল কাজ করে। মূলত বিভিন্ন স্বর্ণ বিপণি এবং স্বর্ণ ঋণ দানকারী সংস্থায় তারা লুটপাট চালায়। সম্প্রতি হাওড়ার একটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনাতেও সুবোধের যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। গত কয়েক বছরে এমন ১১টি অভিযোগ উঠেছে সুবোধ ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। তাতে প্রায় ২০০ কেজিরও বেশি সোনা লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু মূলত ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত সুবোধ আচমকা কেন ‘তোলা’ চেয়ে গুলি চালানো বা হুমকি ফোন করতে শুরু করল, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। এক সময়ে অন্যত্র অপরাধ করে এসে টিটাগড়, ব্যারাকপুরে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা ওই দুষ্কৃতী কি তা হলে সেই সব এলাকায় নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে? না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য বা রাজনৈতিক মদত রয়েছে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চাইছে পুলিশ। আবার জেলে সুবোধকে জেরা করে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে এলে তাকে ব্যারাকপুরে নিয়ে আসার পরিকল্পনাও রয়েছে তদন্তকারীদের। ব্যারাকপুরের উপ-নগরপাল (দক্ষিণ) অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে ঘটনার দ্রুত কিনারা করা যায়।’’
অন্য দিকে, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে নিজের আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন তাপস। তিনি আবেদন করেছেন, বার বার সুবোধ যে হুমকি ফোন করছে, সে বিষয়টি যেন পুলিশ-প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখে।