দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাউন্সিলরের গাড়ি। ফাইল চিত্র
গাড়ির গতি ছিল অত্যন্ত বেশি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক্টরে ধাক্কা মারায় মৃত্যু হয় বারাসত পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর এবং তাঁর ভাইয়ের। রবিবার রাতে ওই দুর্ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে এমনই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। সোমবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ-দল। তারা দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি এবং ট্রাক্টরটি পরীক্ষা করে। পরে তদন্তকারী অফিসার চিত্রাক্ষ সরকার বলেন, ‘‘কাউন্সিলরের গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি ছিল। সেই কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।’’ চালকের নামে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর মামলাও রুজু হয়েছে।
রবিবার রাতে হুগলির শিয়াখালার দেশমুখো এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বারাসতের তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যোত ভট্টাচার্য এবং তাঁর ভাই প্রণব ভট্টাচার্যের। প্রণববাবুর মেয়ের অন্নপ্রাশনের জন্য বারাসত থেকে বাঁকুড়ায় পৈতৃক বাড়িতে আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করতে গিয়েছিলেন দুই ভাই। ফেরার পথে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে।
চণ্ডীতলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, দেশমুখোর কাছে প্রচণ্ড গতিতে পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে ট্রাক্টরের পিছনে ধাক্কা মারে প্রদ্যোতবাবুদের গাড়ি। ধাক্কার অভিঘাতে গাড়ির সামনের বাঁ দিকের অংশ ট্রাক্টরের মধ্যে ঢুকে যায়। চালকের আসনের পাশে ছিলেন প্রদ্যোতবাবু। পিছনের সিটে ছিলেন প্রণববাবু। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, গাড়িটির বাঁ-দিক ট্রাক্টরের মধ্যে ঢুকে যাওয়ায় প্রদ্যোতবাবু বা প্রণববাবু, কেউই বেরোতে পারেননি। তবে ডান দিকে থাকায় রক্ষা পেয়েছেন গাড়িচালক দেবকুমার দে। হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন,‘‘যে অঞ্চলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই এলাকার রাস্তা ছিল ফাঁকা। জোরে গাড়ি চালাতে গিয়েই চালক ট্রাক্টরে ধাক্কা মারেন। সেটির বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হয়েছে।’’
শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পর এ দিন বিকেলে দুই ভাইয়ের দেহ বারাসতে আনা হয়। প্রদ্যোতবাবুর ওয়ার্ড, পুরসভা থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর নয়ন কানন এলাকার বাড়িতে। এলাকায় মিশুকে বলে পরিচিত কাউন্সিলরকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি ভিড় করেছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যায় বারাসত থেকে দুই ভাইয়ের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়ায়।