—ফাইল চিত্র
দাপট বাংলার!
বঙ্গের জেলে বাংলার দাপট থাকবে। তাতে আর চমকের কী আছে? তবে শুধু এ পার বাংলার নয়। দাপট দেখিয়েছেন ওপার বাংলার অ্যাথলিট-বন্দিরাও। আর সঙ্গী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প-প্রচার কর্মসূচি।
কয়েক দিনের বাছাই পর্ব শেষে শনিবার দমদম সেন্ট্রাল এবং প্রেসিডেন্সি জেলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফাইনাল ছিল।
দমদম সেন্ট্রাল জেলের ১৫টি ‘ইভেন্টে’ অংশ নিয়েছিলেন প্রায় চারশো বন্দি। অন্য ‘ইভেন্ট’-এর সঙ্গে ছিল বয়স্কদের জন্য ১০০ মিটার হাঁটা আর ছ’বছরের নীচের শিশুদের ছিল ৫০ মিটারের দৌড়। সেখানেই মহিলা বন্দিদের খেলায় স্থানাধিকারী হিসাবে উপস্থিত তিন হাজার বন্দির নজর কাড়েন নানা কারণে এ পার বাংলার জেলে দিন কাটানো
বাংলাদেশের মহিলা বন্দিরা। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সেরা মহিলা হিসাবে সকলের নজর কাড়েন বাংলাদেশের স্বপ্না খান। ছ’বছরের নীচে শিশুদের জন্য দৌড় ছিল। ছ’বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য মোরগ লড়াই এবং বিস্কুট দৌড় ছিল। সেখানে সকলকে পিছনে ফেলে প্রতিযোগিতার স্থানাধিকার করে বাংলাদেশের শিশুরাই। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মায়ানমারের শিশুদের টেক্কা দিতে হয় তাদের। অবশ্য পুরুষ প্রতিযোগী হিসেবে সেরার শিরোপা পেয়েছেন এ বঙ্গের বাসিন্দা মিলন টুডু।
বাংলাদেশিদের ‘সক্ষমতা’ই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অন্যদের টেক্কা দিয়েছে বলে মত কারা দফতরের। কারণ, বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, পাকিস্তানের বন্দিরাও দমদমে কারাবাস করছেন। কিন্তু সে ভাবে অন্য কোনও দেশের বন্দিরা জায়গা করতে না পারলেও ভারত-সহ অন্য দেশকে টেক্কা দিয়েছেন বাংলাদেশিরা। কারা দফতরের কর্তারা বিষয়টির সঙ্গে কয়েক দিন আগে হওয়া অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালের তুলনাও টানছেন। সেখানে, ভারতকে হারিয়ে সেরা হয়েছিল আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল।
বিভিন্ন প্রকল্প সঙ্গী করে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই তালিকার সামনের সারিতে রয়েছে ‘মিশন নির্মল বাংলা’, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’। ওই দুই প্রকল্প এ বার জেলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেও জায়গা করে নিল। প্রেসিডেন্সি জেলের ‘যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতা’য় প্রথম দু’টি স্থান দখল করে এই দু’টি প্রকল্প এবং প্রচার কর্মসূচি। প্রতিযোগীরা ওই দুই প্রকল্পের সঙ্গে মিল রেখে নিজেরা সেজেছিলেন। তৃতীয় স্থান যায় জিমন্যাস্টিক্সের দখলে।
তবে জেলের অন্দরে হওয়া ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় নজর ছিল বন্দি থেকে কর্মী-আধিকারিক-সকলেরই। বাছাই থেকে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছন কুড়ি জন বন্দি। সেখানে বিজয়ী হন ভোলা চট্টোপাধ্যায় নামে এক সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। প্রেসিডেন্সিতে হওয়া ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ১৪টি ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় তিনশো বন্দি। বছর কয়েক আগে জেল চত্বরের বাইরে শহরে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সির বন্দিরা। কারা দফতরের কর্তাদের মতে, ‘‘বন্দিদশার একঘেয়ে জীবন থেকে কিছুটা পরিবর্তন করতেই সংশোধনাগারের অন্দরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়।’’