নতুন: জোরকদমে রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
উপায় থাকলেও ব্যবস্থা ছিল না! এ বার সেই ব্যবস্থাই পাকাপাকি হচ্ছে।
এক কিলোমিটার দূরত্ব যেতে প্রায় চার-পাঁচ কিমি ঘুরতে হত বাসিন্দাদের। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁদের দাবি ছিল ওই এক কিমি দূরত্ব পেরোতে নতুন রাস্তা তৈরি হোক। জমি পাওয়া নিয়েও সমস্যা হচ্ছিল। অবশেষে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের আর্থিক সহযোগিতায় বেলুড় ও লিলুয়ার মধ্যে সহজে যাতায়াতের জন্য তৈরি হচ্ছে কংক্রিটের রাস্তা।
বেলুড় স্টেশনের পূর্বে হাওড়া পুরসভা এলাকা আর পশ্চিমে রয়েছে বালির পঞ্চায়েত এলাকা। ওই স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশ দিয়েই তৈরি হচ্ছে নতুন এক কিলোমিটারের রাস্তাটি। সেখান থেকে শুরু হয়ে লিলুয়ার পটুয়া পাড়ার কাছে গিয়ে মিশছে রাস্তাটি। স্থানীয় সূত্রের খবর, এত দিন পঞ্চায়েত এবং বেলুড় স্টেশন সংলগ্ন পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের লিলুয়ায় পৌঁছতে জিটি রোড ঘুরে যেতে হত। তাতে সময় এবং দূরত্ব দুই-ই বেশি লাগত। বেশি সমস্যা হত বেলুড় স্টেশন সংলগ্ন সুভদ্রা নগরের বাসিন্দাদের। ওই অঞ্চলটি বেলুড় ও লিলুয়া স্টেশনের মাঝে রয়েছে।
বর্ষায় বেশি সমস্যায় পড়তেন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। কারণ তাঁদের জিটি রোডে আসতে বেলুড় স্টেশনের ভূগর্ভস্থ পথ পেরোতে হত। বর্ষায় সেখানে এতই জল জমে যে অগত্যা রেললাইন পার করতে হয়। আবার লিলুয়া এলাকার বিভিন্ন স্কুলে আসতে গেলেও পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পড়ুয়াদের ঘুরপথই ছিল ভরসা। তাড়া থাকলে অনেকেই সাইকেল ও মোটরবাইক নিয়ে বেলুড় স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপর দিয়ে ওই এক কিমি পথ পেরোতেন। কিন্তু রেল প্ল্যাটফর্মের দু’প্রান্তে লোহার বিম বসিয়ে দিয়ে সাইকেল ও বাইক চলাচল বন্ধ করে দেয়। বেলুড় ও লিলুয়া স্টেশনের মাঝে রেললাইনে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে আহত কিংবা নিহতকে নিয়ে আসতে অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকানো যায় না, স্ট্রেচারে করে বয়ে আনতে হয়। তাতেও সমস্যায় পড়তে হত রেলপুলিশকে।
নতুন রাস্তাটি তৈরি হলে এই সমস্যাও মিটবে বলে দাবি পুলিশের। বেলুড়ের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশেই রয়েছে পরিত্যক্ত নিস্কো কারখানা। জঙ্গলে ভরে ওঠা কারখানাটি কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করে। এর পরেই রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়। রেলের সঙ্গেও আলোচনা করা হয় নতুন রাস্তা তৈরির বিষয়ে। কারণ যে জায়গায় রাস্তাটি তৈরি হচ্ছে সেখানে রেলের নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে।
বালি-জগাছা পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে ১২ ফুট চওড়া ওই রাস্তা। খরচ হচ্ছে প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস মাইতি জানান, রেলের নিকাশি ব্যবস্থা যাতে ব্যাহত না হয় তাই ওই রাস্তার নীচে কালভার্ট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গল কেটে যন্ত্রের সাহায্যে মাটি সমান করে ইট বসানো হয়েছে। তার পরে কংক্রিট করা হবে। ছোট গাড়িও ওই রাস্তা ধরতে পারবে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে রেলের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তাটি বানানো হচ্ছে। এতে সমস্যা মিটবে। রাস্তা হলে আলোর ব্যবস্থাও করা হবে।’’