Bagjola Canal

বাজার যেন জতুগৃহ,তবু অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিপূরণে ত্রিপল দান

বাগজোলা খালপাড় বরাবর বিধাননগর পুর এলাকা ছাড়াও দখলদারেরা রয়েছেন জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতেও। যদিও নিউ টাউনের লাগোয়া ওই জায়গা পুরোদস্তুর শহর। ফলে বসতিও যথেষ্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:৪২
Share:

দখল: বাগজোলা খালের ধারে এ ভাবেই তৈরি হয়েছে ঝুপড়ি দোকান। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

সরকারি নীতি, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ হবে না। সেই নীতির আড়ালে বাগজোলা খালপাড়ে বাঁশ, ত্রিপল, দরমা দিয়ে দোকান বা ঘর তৈরি করে এলাকাটিকে জতুগৃহে পরিণত করেছেন দখলদারেরা। ডিসেম্বরেই অল্প দিনের ব্যবধানে দু’টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ত্রিপল, বাঁশ কিংবা দরমার মতো দাহ্য বস্তু থাকায় সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে একের পর এক দোকানে।

Advertisement

গত ডিসেম্বরেই বাগজোলা খালপাড়ের দু’টি বাজারে রাতে আগুন লাগে। একটি জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) এলাকার অধীন গৌরাঙ্গনগরে, অন্যটি বিধাননগর পুর এলাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন মৃধা মার্কেটে। দু’টি ঘটনাতেই বহু দোকান ভস্মীভূত হয়। সবই ছিল ত্রিপল, বাঁশ দরমা দিয়ে তৈরি। এলাকাটি এতটাই জনবহুল যে, দিনের বেলায় ওই আগুন লাগলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তার পরেও কড়া হয়নি প্রশাসন। উল্টে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ব্যবসায়ীদের সাহায্য করতে টাকা, কম্বল এবং দোকান তৈরির জন্য ত্রিপল দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

সেচ দফতর কিংবা বিধাননগর পুরসভার দাবি, খালপাড়ের ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের জন্য সরকার পুনর্বাসনের কথা ভাবছে। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘খালপাড়ের বাসিন্দা বা ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য বিধাননগর পুরসভাকে বলা হয়েছে জায়গার ব্যবস্থা করতে।’’ তবে কত দিনে তা বাস্তবায়িত হবে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।

Advertisement

যত দিন তা না হবে, তত দিন কি এমন জতুগৃহই থাকবে? কেন তাঁদের বলা হবে না ভ্রাম্যমাণ দোকানের ব্যবস্থা করতে? বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকার চাইছে খালপাড় দখলমুক্ত করতে। ফলে নতুন পরিকল্পনা করার মানে দখলদারদের ওই জায়গায় বসতে উৎসাহ দেওয়া হবে। পুনর্বাসনের কাজে দখলদারদের উপরে সমীক্ষা শুরু করবে পুরসভা।’’

বাগজোলা খালপাড় বরাবর বিধাননগর পুর এলাকা ছাড়াও দখলদারেরা রয়েছেন জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতেও। যদিও নিউ টাউনের লাগোয়া ওই জায়গা পুরোদস্তুর শহর। ফলে বসতিও যথেষ্ট। শনিবার ওই সব জায়গায় গিয়ে দেখা গেল, কেউ বাঁশের ঠেকনা দিয়ে ত্রিপল টাঙিয়ে তার নীচে ব্যবসা করছেন। কেউ বাঁশ-দরমা দিয়ে তৈরি করেছেন ঘর। দখলদারদের দাবি, ওই জায়গায় তাঁরা বহু বছর ধরে রয়েছেন। অন্যত্র যাওয়ার সামর্থ্য তাঁদের নেই।

প্রশাসনের অবশ্য দাবি, তারা চেষ্টা করছে, বছর দেড়েকের মধ্যে দখলদারদের পুনর্বাসন দিয়ে খালপাড় মুক্ত করার। সেই মতো হকারদের জন্য স্থায়ী বাজার করতে নিউ টাউন ও বিধাননগর পুর এলাকায় জায়গা খোঁজা হচ্ছে। যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন এমন জতুগৃহে বাস করা ছাড়া উপায় নেই বলেই মনে করছেন জগৎপুর-গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement