হাতেনাতে: হেলমেট না পরেই স্কুলে আসা ছাত্রী ও তার অভিভাবককে সচেতন করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের সামনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
মা-বাবার হেলমেট রয়েছে। কিন্তু তাঁদের মাঝে বসা মেয়ের হেলমেট নেই। কেন নেই? প্রশ্ন করলেন দিদিমণি। বেথুন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীটি জানায়, হেলমেট পরার অভ্যাস নেই। তাই পরা হয়নি। পরদিন থেকে যেন স্কুলে আসার সময়ে সে হেলমেট পরে আসে, ছাত্রীকে এমনই আদেশ দিলেন দিদিমণি। সচেতন করা হল তার অভিভাবককেও। এক শিক্ষিকার কথায়, ‘‘বাবার হেলমেট আছে, মেয়ের মাথায় নেই কেন? অনেক ক্ষেত্রেই এটা দেখলাম। দুর্ঘটনা ঘটলে তো মেয়েরও গুরুতর বিপদ হবে। বাবা সচেতন না হওয়ায় মেয়েকে হেলমেট দেননি। তাই তাঁদেরই সচেতন করেছি।’’
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে ঢোকার সময়ে বৃহস্পতিবার সকালে এ ভাবেই কয়েক জন শিক্ষিকা দেখলেন, কোন কোন ছাত্রী হেলমেট ছাড়া অভিভাবকের সঙ্গে আসছে। এ দিন যারা হেলমেট ছাড়া আসে, তাদের এবং অভিভাবকদের সচেতন করলেন শিক্ষিকারা। যারা হেলমেট পরে এসেছে, তাদের প্রশংসা করলেন তাঁরা। শিক্ষিকা কাকলি চৌধুরী জানান, স্কুল শুরুর সময়ে গেটের সামনে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে হেলমেট না পরা ন’জন ছাত্রীকে তাঁরা ধরেন।
এ দিন অষ্টম শ্রেণিতে পড়া মেয়েকে মোটরবাইকে চাপিয়ে স্কুলে পৌঁছে দিতে এসেছিলেন বাবা। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। কেন? বাবার উত্তর, ‘‘বাড়ির কাছেই স্কুল। তাই আর হেলমেট পরা হয়নি।’’ তবে হাতেনাতে ধরা পড়ে তিনি জানান, এমন ভুল আর হবে না। প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, ‘‘স্কুলের সামনে এই সচেতনতার অভিযান আগামী দিনেও চলবে। মেয়েরা যদি এখন থেকে হেলমেট পরতে সচেতন হয়, তবে বড় হয়েও অভ্যাসটা থাকবে।’’
জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের সহযোগিতায় এ দিনের সচেতনতা অভিযান হয়। ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিক জানান, ওই ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় ১২টি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্কুল শুরুর সময়ে সেখানে এই অভিযান চলবে। বুধবার দুপুরে বড়বাজারের হরিয়ানা ভবনে শিক্ষক, শিক্ষিকাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্র্যাফিক আধিকারিকদের বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই ভিডিয়োয় দেখানো হয়েছিল, কী ভাবে স্কুলের সামনে আইন ভাঙা হচ্ছে। হেলমেটহীন বাইকচালকেরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। ওদের মাথাতেও নেই হেলমেট। এক ট্র্যাফিক কর্তা বলেন, ‘‘ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন ঠেকাতে শুধু জরিমানা নয়, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সচেতন করা জরুরি।’’