বিধানসভা ভোটের পর থেকে রাজ্য জুড়ে বিরোধীদের অস্তিত্বই সঙ্কটে। রাস্তায় বিশেষ চোখে পড়ছে না তাদের। বরং, দল ভাঙানোর ধাক্কায় বিরোধী শিবির বিপর্যস্ত। অথচ তার মধ্যেও পুজোয় সিপিএমের বই বিপণিতে হামলার অভিযোগে বিতর্ক বাধল।
পুজো মণ্ডপের আশেপাশে মার্ক্সীয় সাহিত্যের স্টল খোলা বামপন্থীদের বরাবরের সংস্কৃতি। বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বিপণির সংখ্যা কমেছিল। কিন্তু বন্ধ হয়নি। দু’বছরে বিপণির সংখ্যা আবার বাড়িয়ে নিতে পেরেছিল তারা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের লেখা ‘ফিরে দেখা’ গত বছর পুজোয় নিঃশেষ হয়েছিল অষ্টমীর মধ্যে। আর এ বার সপ্তমী না ফুরোতেই বিপণিতে বাধা বা ভাঙার অভিযোগ এসেছে কলকাতার বেলেঘাটা, বেলগাছিয়া, সিঁথির মতো কিছু জায়গা থেকে। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য জানাচ্ছেন, তাঁরা এমন ঘটনা অনুমোদন করেন না।
সিপিএমের অভিযোগ, বেলেঘাটা রাসমণি বাজারে তাদের স্টল খোলার সময়ে তৃণমূলের লোক এসে বলেছে, বই রাখতে হবে দলীয় কার্যালয়ে। সিপিএমের সমর্থকেরা ছাড়া কেউ ওই বই কেনেন না। বাইরে বসার দরকার নেই! কাঁকুড়গাছি বা বেলগাছিয়াতেও জুলুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কোথাও কোথাও স্টল ভেঙেও দেওয়া হয়েছে। অথচ বিপণি খোলার জন্য পুরসভা, পুলিশের প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া ছিল বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে পুজোর পরে প্রতিবাদে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে কলকাতা জেলা সিপিএম। অন্যত্রও বিপণিতে হামলার অভিযোগ এসেছে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘রাজ্য জুড়ে আমাদের বইয়ের স্টলে নাৎসি কায়দায় হামলা চালিয়ে তৃণমূল প্রমাণ করেছে, বোমার চেয়ে বই শক্তিশালী!’’ সূর্যবাবুর আহ্বান, ‘‘আরও বেশি করে বই কিনুন!’’ তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিজেদের সাহিত্য নিয়ে প্রদর্শনী বা বিক্রির অধিকার সকলেরই আছে। কোথাও কোথাও স্থানীয় লোকজন তো ওদের (সিপিএম) দল থেকেই এ দিকে এসেছে! খোঁজ না নিয়ে এই ব্যাপারে মন্তব্য করা উচিত হবে না।’’