শ্মশানের পথে। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
তিন দিন হাসপাতালে মর্গে থাকার পরে অবশেষে রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে-র মৃতদেহ নিলেন তাঁর কাকা অরুণ দে। শুক্রবার দুপুরে এসএসকেএম থেকে দেহ নিয়ে অরুণবাবু প্রথমে একবালপুর গির্জায় যান। পরে বিকেলে কেওড়াতলা শ্মশানে পার্থর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার খিদিরপুরের এক অভিজাত আবাসনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় কঙ্কাল-কাণ্ডের পার্থ দে-র। ময়না-তদন্তের পরে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ হয়েই মারা গিয়েছেন পার্থ। তাঁর মা মারা গিয়েছিলেন অনেক আগেই। বাবা ও দিদির সঙ্গে পার্থ থাকতেন রবিনসন স্ট্রিটে নিজের বাড়িতে। কাকা অরুণ দে থাকতেন পাশেই।
২০১৫ সালের জুন মাসে পার্থর বাবা অরবিন্দবাবু আগুনে পুড়ে মারা যান। তখনই পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন ৬ মাস আগে মৃত দিদি দেবযানীর দেহ নিয়ে আগলে বসে রয়েছেন পার্থ। খবরের শিরোনামে উঠে আসে তাঁর নাম। পুলিশ জানায়, মানসিক সমস্যায় ভুগছেন পার্থ। প্রথমে গ্রেফতার করে পরে চিকিৎসার জন্য পার্থকে পাভলভে পাঠানো হয়। সেখান থেকে মাদার হাউস ও পরে খিদিরপুরের ফ্ল্যাটে বাস শুরু করেন তিনি। বাবা, মা, দিদির মৃত্যুর পরে পার্থর নিকটাত্মীয় ছিলেন কাকাই।
মঙ্গলবার পার্থর মৃত্যুর পরে আত্মীয়দের সকলেই তাঁর দেহ নিতে অস্বীকার করেন। মিশনারিজ অব চ্যারিটির ফাদার রডনি পুলিশকে জানান কেউ দেহ না নিলে তিনিই সৎকারের ব্যবস্থা করবেন। এর পরেই শুক্রবার ওয়াটগঞ্জ থানায় এসে দেহ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন অরুণবাবু। পুলিশ জানায়, অরুণবাবু এ দিন ভবানীপুর থানা থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পার্থর দেহ নিতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান।
প্রথমে কেন দেহ নিতে অস্বীকার করেছিলেন তিনি? মাঝে শোনা যায় রবিনসন স্ট্রিটের বাড়ি নাকি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। সেটা কি ঠিক? হাত জোড় করে অরুণবাবু এ দিন উত্তরে বলেন, ‘‘পার্থর মৃত্যুর খবর শুনে শরীর খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই দেহ নিতে দেরি হল।’’ শেষ কবে পার্থর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল, সে বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি তিনি। তবে নিজেকে তাঁর পরিবারের আইনজীবী বলে পরিচয় দেওয়া অরবিন্দ দত্ত তাঁর পাশ থেকে জানান, বাড়ি বিক্রি হয়নি। বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।