গৌর দে লেনে আশাকর্মীরা। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
মেট্রোর সুড়ঙ্গে বিপর্যয়ের পরে এখন প্রায় সুনসান বৌবাজারের কয়েকটি এলাকা। তবে গত তিন দিন ধরে বৌবাজারের সেই দুর্গা পিতুরি লেন, সেকরাপাড়া লেন, গৌর দে লেনের অলিগলিতে ঘুরছেন আশাকর্মীরা। হাতে তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ করছেন শিশুদের, যাদের এ বছরে পাল্স পোলিয়ো খাওয়ার সময় হয়েছে।
পুরসভার তরফে বছরে চার বার পাল্স পোলিয়ো প্রতিষেধক খাওয়ানো হয় পাঁচ বছরের কমবয়সিদের। এ বারে চতুর্থ দফায় প্রতিষেধক খাওয়ানোর সময় হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই তিন এলাকায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি শিশু রয়েছে, যাদের ওই প্রতিষেধক খাওয়ানো জরুরি। গৌর দে লেনের একটি বস্তিতেও ওই বয়সের কয়েকটি শিশু ছিল বলে জানাচ্ছেন আশাকর্মীরা। কিন্তু মেট্রো-বিপর্যয়ের ধাক্কায় ওই এলাকাবাসীদের শহরের নানা হোটেল ও অতিথিনিবাসে সরানো হয়েছে। সরানো হয়েছে বস্তিবাসীদেরও। ফলে তাঁদের খুঁজে পেতে কালঘাম ছুটছে আশাকর্মীদের।
৪৮ নম্বর ওর্য়াডের ফুলবাগান অফিসে বসে পুরসভার পাল্স পোলিয়ো সুপারভাইজ়ার জলি দাস বলেন, ‘‘আশাকর্মীরা শিশুদের নাম নিয়ে খোঁজ করছেন। তার পরে মেট্রোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানছেন যে, কোন হোটেল অথবা অতিথিনিবাসে ওই সব পরিবারগুলি রয়েছে।’’ তবে একের পর এক বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ার জন্য শিশুদের খোঁজে গিয়ে বিস্তর অসুবিধার মুখে পড়েছেন ওই সব ‘আশা-দিদি’রা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে খুব অল্প সময়ের জন্যেই তাঁদের বৌবাজার এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘোরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তাই শিশুদের নামের তালিকা মিলিয়ে মিলিয়ে তাদের খোঁজ করতে গিয়ে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে তাঁদের। ওই এলাকায় কতর্ব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘ওখানে পুরসভার তরফে মাটি পরীক্ষার কাজ চলছে। কিছু বাড়ি বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে পুরসভা। তাই কয়েকটি এলাকায় বিশেষ সর্তকতা নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আশা-কর্মীদের সঙ্গে সব সময়েই সহযোগিতা করছি।’’
শিশুদের খোঁজে বেরিয়ে এলাকা চষে ফেলা আশা-কর্মীরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই তাঁরা বেশ কিছু শিশুর খোঁজ পেয়েছেন। তাদের প্রতিষেধক টিকাও দেওয়া হয়েছে। আর বাকি শিশুরা বর্তমানে শহরের যে সমস্ত এলাকার হোটেল বা অতিথি নিবাসে রয়েছে, সেই এলাকায় কর্তব্যরত আশা-কর্মীদের এ ব্যাপারে তথ্য জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরে সেই এলাকার আশা-কর্মীরা হোটেল বা অতিথি নিবাসে গিয়ে ওই শিশুদের টিকা দেওয়ার কাজ করছেন।