—প্রতীকী চিত্র।
বরাহনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। মূলত দু’টি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে আপাতত গোটা বিষয়টিকে খুন এবং তিন জনই নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও পুলিশকর্তাদের দাবি, মৃতদেহগুলিতে এতটাই পচন ধরেছিল যে, শরীরের আঘাতগুলি থেকে নিশ্চিত ভাবে কিছু বোঝা যাচ্ছে না বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাই ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরেই সব কিছু আরও স্পষ্ট হবে।
নববর্ষের সকালে বরাহনগরের নিরঞ্জন সেন নগরে এক বাড়ি থেকে বৃদ্ধ শঙ্কর হালদার, তাঁর ছেলে অভিজিৎ হালদার ও নাতি দেবার্পণের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। সূত্রের খবর, তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই রহস্য দানা বাঁধছে। বাড়িতে চারটি সিসি ক্যামেরা থাকলেও তার ফুটেজ সংরক্ষণের যন্ত্রের (ডিভিআর) হদিস নেই কেন, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। যদি ধরা হয়, অভিজিৎ তাঁর বাবা ও ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন, তা হলে তিনি ডিভিআর সরাবেন কেন? কেন খাবার ঘরের ভিতরের সিসি ক্যামেরার উপরে প্যান্ট চাপা দেওয়া হল? কে সেই কাজ করল? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, অভিজিতের একটি ফোনেরও হদিস মেলেনি। কোথায় সেটি রয়েছে, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
ডিভিআরের বিষয়টি নিয়ে ধন্দে রয়েছেন প্রতিবেশীরাও। স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক সোমনাথ সরকারের কথায়, ‘‘এলাকায় কোনও চুরি হলে অভিজিৎদার বাড়িতে গিয়ে বড় টিভিতে রাস্তার ফুটেজ দেখতাম। তা হলে ওই যন্ত্র গেল কোথায়?’’ ওই যুবকের মতো অন্য বাসিন্দারাও মানতে নারাজ যে, পুরো কাণ্ড অভিজিৎ ঘটিয়েছেন। বরং তাঁরা বলছেন, ‘‘যিনি কোনও দিন জোর গলায় কারও সঙ্গে কথা বলেননি, তিনি এমন কাজ করতে পারেন বলে বিশ্বাস হয় না।’’ এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও কিছু নিশ্চিত ভাবে বলার মতো সময় এখনও আসেনি।’’
মঙ্গলবারও ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল আসে। তাঁরা ফের কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পুলিশকর্তারা জানান, এ বার অভিজিৎদের ঘরগুলিতে ভাল করে তল্লাশি চালানো হবে। বৃহস্পতিবার আশপাশের পুকুর ও ঝোপজঙ্গলে তল্লাশি চালানো হবে ডিভিআর ও মোবাইলের খোঁজে। আশপাশের বাড়ি, দোকানে যে সমস্ত সিসি ক্যামেরা রয়েছে, সেখান থেকে গত ১১ ও ১২ এপ্রিলের ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।