কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বাড়ির নকশা অনুমোদনের আবেদন জমা পড়ার পরে যে জমিতে বাড়িটি হতে চলেছে, সেটির একটি সমীক্ষা বা ‘সার্ভে অবজ়ারভেশন রিপোর্ট’ কলকাতা পুরসভার সার্ভে দফতরের তরফে জমা করা হয়। সেই সমীক্ষা-রিপোর্ট কত দিন বৈধ থাকবে, এ বার তার নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করে দিল পুরসভা।
ঠিক হয়েছে, জমির নকশা অনুমোদনের আবেদনের সময়ে পুর সার্ভে দফতর যখন প্রথম বার এই সমীক্ষা-রিপোর্ট দেবে, তখন থেকে তিন বছর পর্যন্ত সেই রিপোর্টটি বৈধ থাকবে। তার পরে আর ওই রিপোর্টের বৈধতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে নতুন করে সমীক্ষা-রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট নাগরিককে আবেদন করতে হবে পুরসভার কাছে। ওই আবেদনে প্রথম বারের সমীক্ষা-রিপোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করলে পুরো প্রক্রিয়াটি দ্রুততর হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
কেন ‘সার্ভে অবজ়ারভেশন রিপোর্ট’-এর বৈধতার সময়সীমা তিন বছর পর্যন্ত রাখা হল?
পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট জমিটি সরেজমিনে পরিদর্শনের উপরে ভিত্তি করে এই সমীক্ষা-রিপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই জমিতে বদল আসতে পারে। যেমন, জমির একাংশে বদল হতে পারে কিংবা সেটি জবরদখল হতে পারে। আবার, জমি সংক্রান্ত অন্য জটিলতাও দেখা দিতে পারে। এক পুর আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘বিশেষত জবরদখল একটা বড় সমস্যা। ফাঁকা জমি থাকলেই, তা সরকারি হোক অথবা বেসরকারি, দ্রুত জবরদখল হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, যখন নকশা অনুমোদনের সময়ে প্রথম সার্ভে রিপোর্টটি দেওয়া হয়েছিল, তার সঙ্গে বর্তমানে ফারাক হয়ে যাচ্ছে। তাই এমন সিদ্ধান্ত।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, লাইসেন্সড বিল্ডিং সার্ভেয়র (এলবিএস) বা স্থপতির (আর্কিটেক্ট) করা জমির নকশার উপরে ভিত্তি করে সার্ভে দফতর এই রিপোর্ট দিয়ে থাকে। তবে, সে ক্ষেত্রে সার্ভে দফতরের তরফে শুরুতেই এটা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয় যে, এই রিপোর্ট কোনও ভাবেই জমির মালিকানার প্রমাণ কিংবা জমির উপরে কোনও নির্মাণ বা জমি ঘেরার অধিকার দেয় না। এটাও স্পষ্ট বলা থাকে, এলবিএস কিংবা স্থপতির দাখিল করা ‘সাইট প্ল্যান’-এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও ফারাক থাকলে পুর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সার্ভে রিপোর্টটি বাতিল করতে পারেন। একই সঙ্গে ভুল তথ্য জমা দেওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট এলবিএস বা স্থপতির লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে।