কম্পনে কি মূর্তির ক্ষতি, হবে পরীক্ষা

রাস্তার উপর দিয়ে ক্রমাগত চলে যাওয়া গাড়ি বা ভূপৃষ্ঠের নীচে মেট্রোর কম্পনের ফলে কি মূল্যবান, প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীর কোনও ক্ষতি হচ্ছে? সেগুলির আয়ু কি ক্রমশ ফুরিয়ে যাচ্ছে? সে সম্পর্কে নিঃসংশয় হতেই এ বার পরীক্ষা করতে চলেছেন ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০২:২০
Share:

রাস্তার উপর দিয়ে ক্রমাগত চলে যাওয়া গাড়ি বা ভূপৃষ্ঠের নীচে মেট্রোর কম্পনের ফলে কি মূল্যবান, প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীর কোনও ক্ষতি হচ্ছে? সেগুলির আয়ু কি ক্রমশ ফুরিয়ে যাচ্ছে? সে সম্পর্কে নিঃসংশয় হতেই এ বার পরীক্ষা করতে চলেছেন ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কর্তৃপক্ষের তরফে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মূর্তিগুলি সুরক্ষিত আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। তার জন্য ইতিমধ্যেই জাদুঘর কর্তৃপক্ষের তরফে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে লখনউস্থিত ‘ন্যাশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ফর কনজারভেশন অব কালচারাল প্রপার্টি’র (এনআরএলসি) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জাদুঘর সূত্রের খবর, এনআরএলসি পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, আগে একটি পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা হবে। তার পরেই এ বিষয়ে তারা চূড়ান্ত মতামত দিতে পারবে।

জাদুঘরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জওহরলাল নেহরু রোড দিয়ে প্রতিদিন অগুনতি গাড়ি যাতায়াত করে। সেই সঙ্গে পাশেই মেট্রো স্টেশন। গাড়ি বা মেট্রো চলাচলের জন্য যে কম্পন হয়, তাতে মূর্তির ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, কম্পনের ফলে প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীর যে ক্ষতি হয়, তা সহজে বোঝা যায় না। ধীরে ধীরে বোঝা যায়। তাই বিশ্বের অনেক জাদুঘরেই তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে ভারতীয় জাদুঘরের নীচের তলায় যে সব প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী রয়েছে, সে সব পরীক্ষা করা দরকার। তাই এই ভাবনা।

Advertisement

জাদুঘরের অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত বলেন, ‘‘গাড়ি চলাচল বা অন্য কম্পনের ফলে মূর্তির ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। মূর্তি কী ভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, সে ব্যাপারে ন্যাশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ফর কনজারভেশেন অব কালচারাল প্রপার্টির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাদের ইঞ্জিনিয়ার, আধিকারিকেরা এখানে এসে বিষয়টি সমীক্ষা করে দেখবে। তার পরে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’’

জাদুঘরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরীক্ষার পরে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি হবে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এনআরএলসি-র রিপোর্টের উপরেই পুরোটা দাঁড়িয়ে। যদি মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে, তা হলে সংস্কার হবে।’’ তখন ভারতীয় জাদুঘর অনেক দিনের জন্য বন্ধও রাখা হতে পারে। অধিকর্তার কথায়, ‘‘সংস্কারের প্রয়োজন হলে তো জাদুঘরের গ্যালারি বন্ধ রাখতে হবে অনেক দিন। এটা তো অনেক বড় প্রকল্প।’’

মূর্তি সুরক্ষিত রাখার জন্য আরও একটি কাজ করা হবে। অধিকর্তার কথায়, ‘‘মূর্তির নীচে সিন্থেটিক চাদর দেওয়া হবে একটি। যাতে কোনও ভাবে জল মূর্তিকে স্পর্শ না করতে পারে।’’ কয়েক বছর আগে জাদুঘর সংস্কারের সময়ে ইট-পাথর নিকাশিনালায় জমে গিয়েছিল। যার ফলে ভবনের লনে জল জমে যায়। পরে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, জাদুঘরের নিজস্ব নিকাশি ব্যবস্থার মুখ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সে সব জিনিস জমে। তার জেরে ভবনের ভিতে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জমা জল ঢুকেছিল। সেই সমস্যার সমাধান আগেই হয়েছে। এ বার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement