প্রতীকী ছবি।
অ্যাপ-ক্যাব চালকদের পাশাপাশি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার যে নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার, তাকে স্বাগত জানিয়েছে সিটু, এআইটিইউসি, অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড-সহ অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সব সংগঠনই। তবে, ক্যাব সংস্থাগুলি এ নিয়ে নীরব। শুক্রবার চেষ্টা করেও শহরের দু’টি প্রধান ক্যাব সংস্থার প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এর আগে ২০১৫ সালে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তাতে বিভিন্ন শর্তের মধ্যে চালকের দিকে ক্যামেরা বসানোর প্রস্তাবও ছিল। কিন্তু বাস্তবে সংস্থাগুলি ওই সব শর্তের মাত্র কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশই পূরণ করেনি। ভাড়া নির্ধারণ এবং চালকদের যথেচ্ছ ট্রিপ বাতিল নিয়েও যাত্রী-মহলে বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে ক্ষুব্ধ চালক সংগঠনগুলিও।
সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে যাত্রী টানতে চালকদের বঞ্চিত করে অস্বাভাবিক কম ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ যেমন উঠেছে, তেমনই ঝড়বৃষ্টি, ধর্মঘট-সহ নানা পরিস্থিতিতে যথেচ্ছ সার্জ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। আরও অভিযোগ, ভাড়ার ‘রহস্যময়’ হিসেবের দোহাই দিয়ে সার্জ আদায়ের দায় বার বার এড়িয়ে গিয়েছে সংস্থাগুলি। তবে রাজ্যের নয়া নির্দেশিকায় বিশেষ ফাঁক নেই বলেই জানাচ্ছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মোটরযান আইনকে মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা তৈরি হয়েছিল। রাজ্যের নির্দেশিকাও কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুসরণ করেই হয়েছে।’’
তবে রাজ্যের নির্দেশিকায় অ্যাপ-ক্যাবে যাত্রী-সুরক্ষার স্বার্থে এআইএস-১৪০ ব্যবস্থা বসানোর কথা বলা হয়েছে। ওই খরচ কে বহন করবে, তা নিয়ে সংশয়ে চালকদের সংগঠন। পাশাপাশি, চালকেরা একাধিক সংস্থায় গাড়ি চালান। তাই তাঁদের বিমার খরচই বা কোন সংস্থা বহন করবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। কোনও চালক যাতে একটানা ১২ ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে অ্যাপে উপযুক্ত ব্যবস্থা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে তা সম্ভব, তা নিয়েও সংশয়ী অনেকে। বর্তমানে ক্যাব বুক করার পরে যাত্রীর অপেক্ষার আনুমানিক সময় অ্যাপে দেখানো হয়। কিন্তু রাস্তা খারাপ বা যানজটের কারণে সেই সময় অনেক ক্ষেত্রে বদলে যায়। আবার চালকদের একাংশের অসাধুতায় যাত্রী-হয়রানি বাড়ে। নির্দেশিকায় এই সমস্যার সমাধান নেই, বলছেন অনেকে।
নয়া নির্দেশিকা প্রসঙ্গে সিটুর অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এই প্রথম সরকার ক্যাব সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করায় তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘মহিলা যাত্রীদের সুরক্ষা ছাড়াও ক্যাবের ভাড়ার ৮০ শতাংশ চালককে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত। আশা করব পরিষেবার মানোন্নয়ন হবে।’’ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দ্রুত এই নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করার বিষয়ে প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।’’