প্রতীকী ছবি।
পরিকল্পনা করেই কি খুন করা হয়েছিল কড়েয়া থানা এলাকার ব্রড স্ট্রিটের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ বিশ্বজিৎ বসুকে? ওই খুনের ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থানা এলাকা থেকে দ্বিতীয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পরে তেমনটাই মনে হচ্ছে পুলিশের।
শনিবার রাতেই আনার জমাদার নামে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। রবিবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ঘটনার আট মাস বাদে শুক্রবারই পুলিশ ওই বৃদ্ধ খুনে মুর্শিদ শেখ নামে এক পুরোনো
জিনিসপত্র কেনাবেচার ফেরিওয়ালাকে গ্রেফতার করেছিল। ধৃত ওই ব্যবসায়ী জেরার মুখে পুলিশের কাছে দাবি করেছিল নিহতের বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিল সে। কিন্তু বৃদ্ধ দেখে ফেলায় তাঁকে খুন করা হয়। গত বছরের জুন মাসে কড়েয়া থানা এলাকার ব্রড স্ট্রিটে নিজের বাড়িতেই খুন হয়েছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। পুলিশ জানায়, ধৃত দু’জনেরই বাড়ি পারুলিয়া কোস্টাল থানা এলাকায়। দু’জনেই ফেরিওয়ালা।
প্রথম গ্রেফতারের পরেই তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন মুর্শিদের কথায় বহু অসঙ্গতি রয়েছে। বেশ কয়েক জনের নামও বলে সে। এর মধ্যেই ফলতা থানা সূত্রে আনার জমাদারের কথা জানতে পারেন লালবাজারের তদন্তকারীরা। এক অভিযুক্ত ফলতা থানা এলাকায় ঢুকে লুকিয়ে রয়েছে জানতে পেরেই সেখানকার পুলিশ লালবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে ওই রাতেই তদন্তকারীদের একটি দল ফলতা যায়। সেখানকার স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে হানা দিয়ে আনারকে গ্রেফতার করে।
কেন পরিকল্পনা করে খুনের সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরাও?
লালবাজার সূত্রের খবর, জেরার মুখে আনার দাবি করেছে তারা পার্ক সার্কাস এলাকায় থাকত। ঘটনার সময়ে মুর্শিদ ছাড়াও বিশ্বজিৎবাবুর বাড়িতে হাজির ছিল আক্রম এবং মুর্শিদের দুই আত্মীয়। ওই পাঁচ জন মিলে ঘটনার দিন সাতটা নাগাদ বিশ্বজিৎবাবুর বাড়ির পিছনের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে। কলিং বেলের শব্দে বৃদ্ধ দরজা খুলে দিলে তাঁর বুকে আঘাত করে আক্রম। ভিতরে ঢুকে লুটপাট শুরু করে মুর্শিদ। লুটে বাধা দিলে বৃদ্ধকে মারধর করা হয়। প্রথমে আক্রম তাঁর মুখ চেপে ধরে। আর আনার বৃদ্ধের দুই পা ধরে। পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, মুর্শিদের দুই আত্মীয়ের এক জন ছুরি দিয়ে গলা কাটে বৃদ্ধের। এর পরে একই পথে ট্রেনে চেপে পালিয়ে যায়।
তদন্তকারীদের দাবি, আনার আরও দাবি করেছে তারা ওই এলাকায় থাকত। তবে কেন খুন করা হল সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি আনার। এক তদন্তকারী জানান, পাঁচ জন মিলে বাড়িতে ঢুকবে লুঠপাট করতে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। পাঁচ জন যদি একটি ঘটনাস্থলে যায়, তা হলে ধরে নিতেই হবে পরিকল্পনা
মাফিক তারা সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু ধৃত ফেরিওয়ালাদের সঙ্গে বিশ্বজিৎবাবুর কেন শত্রুতা হবে। ফলে এর পিছনে অন্য কারওর থাকার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।