বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ অনিকেত মাহাতোকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করের অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অবনতি। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরজি কর হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করানো হয়েছে অনিকেতকে। ধর্মতলার অনশনমঞ্চে উপস্থিত চিকিৎসকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ধর্মতলার অনশনস্থল থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অনিকেতকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আরজি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিসিইউতে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে।
হাসপাতাল সুত্রে খবর, অনিকেতের শরীরে আইভি ফ্লুইড চালানো হয়েছে। রক্তের একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে। আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার আশফাক উল্লাহ নায়ার বলেন, ‘‘সঠিক সময় নিয়ে আসার জন্য প্রাণঘাতী হয়নি। কিন্তু আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে।’’
হুইলচেয়ারে অনিকেত মাহাতো। বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র।
অনিকেতের শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা আগেই জানা গিয়েছিল। গত রবিবার রাত থেকে তিনি অনশন করছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ধর্মতলায় গিয়ে আরজি করের ডাক্তার সৈকত নিয়োগী জানিয়েছিলেন, অনিকেতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মূত্রে কিটোন বডি পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে আবার অনিকেতের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তার পরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন উপস্থিত ডাক্তারেরা।
নিজের শারীরিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অনিকেত নিজে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছেন, তিনি কিছুটা অসুস্থ বোধ করছেন। যদিও তাঁর সহকর্মীদের দাবি, অনিকেতের মনের জোর এখনও অটুট।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। প্রথমে ছ’জন অনশন শুরু করেন। পরের দিন তাতে যোগ দেন আরজি করের অনিকেত। যে সাত জন অনশন করছেন, তাঁদের মধ্যে অনিকেতই একমাত্র আরজি করের ডাক্তার। এ ছাড়া, এখনও ধর্মতলায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। অনশনের জেরে তাঁরাও শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
অনিকেতের শারীরিক অবস্থার অবনতি প্রসঙ্গে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘অনিকেতকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আমরা জানি না আর কবে এই সরকারের টনক নড়বে। ওঁর শারীরিক অবস্থার অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা আপনাদের জানাতে থাকব।’’