সল্টলেকের রাস্তায় এক সরকারি কর্মীকে খুনের ঘটনায় যে ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর বাসস্থান সল্টলেকের সরকারি আবাসনেই। অথচ সে ব্যাপারে প্রশাসন পুরোপুরি অন্ধকারে। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনাটি জানার পরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ ব্যাপারে যাবতীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এক-একটি ঘটনা ঘটার পরে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কাজ হয় না। অথচ কয়েক বছর আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকে বহিরাগত কিংবা বসবাসকারীদের সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে সে বিষয়ে স্থানীয় পুরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন অনেক দূর কাজ এগোলেও তথ্যভাণ্ডার গড়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। যদিও বাস্তবে সেই কাজের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। চোখের সামনেই বিভিন্ন সরকারি আবাসনে সরকারি কর্মীদের বাইরেও
অনেকে বসবাস করলেও তা নিয়ে অন্ধকারে প্রশাসন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন এ বিষয়ে জানে না, সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁদের দাবি, সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। যার প্রমাণ বৈশাখী আবাসনের এই ঘটনা। পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের ঘটনায় ধৃত কুন্তল সামন্ত পেশায় ব্যবসায়ী। ধৃতের পরিচিত বিপ্লব নামে এক ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী। তিনিই বৈশাখী আবাসনের ওই ফ্ল্যাটে কুন্তলকে থাকতে দিয়েছিলেন।
এর আগেও চুরি, ছিনতাই-সহ নানা অপরাধে সল্টলেকে বেশ কিছু বহিরাগতের যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে বিভিন্ন সময়ে। তার পরে প্রশাসনের তরফে নানা কথা বলা হলেও আখেরে সে সব কোনও কাজেই লাগেনি বলেই অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে পুলিশের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, সরকারি আবাসনে এ ভাবে বহিরাগত কেউ থাকলে বিভাগীয় দফতরই এ বিষয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিতে পারে। পুলিশের এ ক্ষেত্রে কিছু করণীয় নেই। পুলিশের আরও অভিযোগ, বেসরকারি আবাসন কিংবা ব্লকগুলিতে বাসিন্দাদের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে সর্বতো ভাবে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের কর্ণধার কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘সল্টলেকে বসবাসকারীদের সম্পর্কে প্রশাসনকে যেমন তথ্য রাখতে হবে, সমান দায়িত্ব নিতে হবে বাসিন্দাদেরও। সকলে একযোগে এগিয়ে না এলে বিপদ আরও বাড়বে।’’
এ দিন পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘সল্টলেকে কারা এ ভাবে থাকছেন, তার তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশেষত যে সরকারি কর্মচারী ওই অভিযুক্তকে থাকতে দিয়েছিলেন, তাঁর ব্যাপারেও পদক্ষেপ করা হবে।’’