প্রতীকী ছবি।
করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে লালারসের নমুনা দিতে এসে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে। মৃতের নাম প্রহ্লাদ দাস (৭২)। তাঁর বাড়ি আমডাঙার মরিচা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাসুন্ডায়। ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন প্রহ্লাদবাবুর পরিজনেরা। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন প্রহ্লাদবাবু। শনিবার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সে কারণে করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা দিতে তাঁকে এ দিন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মৃতের এক আত্মীয় বিপ্রদীপ দত্ত জানান, লালারসের নমুনা দেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় কোনও চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি। বিপ্রদীপ বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগে গিয়ে ওঁর অসুস্থার কথা জানাতে আমাকে বলা হয়, চিকিৎসক যেতে পারবেন না। বিনা চিকিৎসায় প্রহ্লাদবাবু মারা গেলেন।’’
যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শনিবার রাতে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তরুণ বালাকে ফোন করে বলা হয়, প্রহ্লাদবাবুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তরুণবাবু যেন অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ওই রাতে হাসপাতালে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স না-থাকায় তরুণবাবু পাঠাতে পারেননি। রবিবার সকালে তিনি পঞ্চায়েত থেকে অ্যাম্বুল্যান্স সংগ্রহ করে চালককে পিপিই কিট দিয়ে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।
তরুণবাবু বলেন, ‘‘রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই তাঁর অবস্থার অবনতি হয়েছিল। পরিজনেরা তাঁকে জরুরি বিভাগে না নিয়ে গিয়ে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জায়গায় নিয়ে যান। নমুনা দেওয়ার পরেই রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন। মেডিক্যাল অফিসার গিয়ে দেখেন, তিনি মারা গিয়েছেন।’’ গাফিলতির অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘জরুরি বিভাগ থেকে লালারসের নমুনা সংগ্রহের জায়গাটি কিছুটা দূরে। পরিবারের লোকজনের উচিত ছিল আগে জরুরি বিভাগে রোগীকে নিয়ে আসা। তাঁরা তা করেননি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই সব জানা যাবে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘যত দূর জেনেছি, লালারসের নমুনা দেওয়ার পরেও কিছু ক্ষণ ওই বৃদ্ধ বেঁচে ছিলেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’