এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি চিকিৎসা। শেষে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হল সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা আকলিমা বিবির। মৃতার পরিজনেদের অভিযোগ, বৃদ্ধার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি, তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। সারা রাত একের পর এক হাসপাতালে ঢোকার ধকল ওই বৃদ্ধা নিতে পারেননি বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, সর্দি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় হাওড়ার একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ওই বৃদ্ধাকে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, বৃদ্ধার হৃদ্যন্ত্রের অবস্থা ভাল নয়। সেখান থেকে হাওড়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় বৃদ্ধাকে।
রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বৃদ্ধাকে নিয়ে এসএসকেএমে আসেন বৃদ্ধার পরিজনেরা। কিন্তু হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকার কথা বলে তাঁদের চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে যেতে বলা হয়। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখানে গেলে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকার কথা বলা হয় বলে দাবি পরিজনেদের। তার পর বৃদ্ধাকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলে পরিজনেরা ওই রাতে বৃদ্ধাকে এসএসকেএমে নিয়ে আসেন। এসএসকেএমের তরফে নাকি বলা হয়, পরের দিন সকাল ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে রোগীকে নিয়ে হৃদ্রোগ বিভাগে নিয়ে যেতে।
মৃতার পুত্র শেখ সাইফুলের দাবি, জরুরি বিভাগে বৃদ্ধাকে নিয়ে গেলে সেখান থেকে বহির্বিভাগে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ইসিজির জন্য ফের নিয়ে যাওয়া হয় জরুরি বিভাগে। সেখানে বৃদ্ধার শারীরিক পরিস্থিতি পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, এক বছর পরে পেসমেকারটি কেমন রয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখতে। সাইফুল বলেন, “মাকে নিয়ে যখন হাসপাতাল থেকে বেরোই, তখন মা স্বাভাবিক ছিলেন। হঠাৎ মায়ের চোখগুলো ঠেলে বাইরে বেরিয়ে আসে। তড়িঘড়ি মাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে কিছু সময় পরে বলেন মা আর বেঁচে নেই।”
মৃতার সন্তানের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বিনিময়ে ঘুষ চাওয়া হচ্ছে। কেন হাসপাতালগুলির মধ্যে সমন্বয় নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এসএসকেএম সূত্রে শুক্রবারই জানা গিয়েছিল যে, কার্ডিয়োলজি বিভাগের আইসিসিইউতে কোনও সাধারণ শয্যায় রাখা হয়নি ইডির হাতে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে। ‘কাকু’ রয়েছেন শিশুদের জন্য বরাদ্দ একটি শয্যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অন্য কোনও শয্যা খালি না থাকায় ওই শয্যায় তাঁকে রাখা হয়েছে।