মঙ্গলবার মৃতদেহের সামনে শপথ নিয়ে পথ চলা শুরু করবেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএসের নতুন বর্ষের আড়াইশোরও বেশি পড়ুয়া ফাইল ছবি।
১৮৩৬ সালের ১০ জানুয়ারি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন অ্যানাটমির শিক্ষক, পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত। লক্ষ্য, বিভিন্ন রোগের কারণ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবস্থান জানা। বঙ্গদেশে চিকিৎসাশাস্ত্রে শব ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের সেই শুরু। মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করতে সে দিন ফোর্ট উইলিয়াম থেকে ২১টি তোপধ্বনি করা হয়েছিল। এর পরে ২০১৪ সালে রাজ্য সরকার ওই দিনটিকে চিকিৎসা শিক্ষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। যা পালন করতে আজ, মঙ্গলবার মৃতদেহের সামনে শপথ নিয়ে পথ চলা শুরু করবেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএসের নতুন বর্ষের আড়াইশোরও বেশি পড়ুয়া।
এর পাশাপাশি সম্মান জানানো হবে ওই হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে থাকা শৌভিক সামন্তকে। আসানসোলের পাঁচ বছরের ওই বালক ১৯৯৮-এ কলকাতায় এসেছিল চিকিৎসার জন্য। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ছেলের আবদারকে সম্মান জানিয়েই তার দেহ হাসপাতালে দান করেছিলেন বাবা। ২৫ বছর ধরে শৌভিকের কঙ্কাল দেখেই হাড়ের বৃদ্ধি, হাড় দেখে বয়স নির্ধারণের মতো বিষয়ে পাঠ নেন ডাক্তারির পড়ুয়ারা। এক দিকে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ, অন্য দিকে, দেশে প্রথম পাঁচ বছরের শিশুর দেহদানের বিষয়টি পালন করবে এন আর এসের ‘মেডিক্যাল এডুকেশন ডে সেলিব্রেশন অ্যান্ড হিউম্যান অর্গান অ্যান্ড বডি ডোনেশন অ্যাওয়ারনেস’ কমিটি। সেটি ও অ্যানাটমি সোসাইটি অব ইন্ডিয়া-র সভাপতি, শিক্ষক-চিকিৎসক অভিজিৎ ভক্ত বলেন, ‘‘দেহ কাটা-ছেঁড়ার পাঠ শুরুর আগে পড়ুয়ারা দেহের সামনে শপথবাক্য পাঠ করেন। শৌভিককে সম্মান জানাতে, মরণোত্তর দেহ ও অঙ্গদানে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পদযাত্রাও হবে।’’