লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
‘ঘাট থেকে আসছি’ বলে গাড়ি থেকে নেমে বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হয়ে যান এক ব্যবসায়ী। তাঁর খোঁজ শুক্রবারও মেলেনি। ওই ব্যবসায়ীর খোঁজে এ দিন দফায় দফায় গঙ্গায় তল্লাশি চালান বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যবসায়ীর নাম সন্দীপন প্রামাণিক (৫৩)। তিনি লাউডন স্ট্রিটের একটি আবাসনে স্ত্রী টুম্পা প্রামাণিক এবং ছেলেকে নিয়ে থাকেন। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সন্দীপন চালককে নিয়ে দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার গোয়ালিয়র ঘাটে যান। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেখানেই চালককে ওই কথা বলে ঘাটের দিকে চলে যান তিনি। এর পরে দীর্ঘক্ষণ পরিবারের সদস্যেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চালকের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি গাড়িতেই ছিলেন। চালকও সন্দীপনকে খুঁজে না পাওয়ায় বিকেল চারটে নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পরিজনেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের তরফে ওই দিন সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ দক্ষিণ বন্দর থানায় যোগাযোগ করা হয়। পরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনেরও খোঁজ মেলেনি। তবে মোবাইল ফোনের টাওয়ারের শেষ অবস্থান দেখা গিয়েছে, গঙ্গার অন্য দিকে, হাওড়ার ফোরশোর রোড এলাকায়। এক পুলিশকর্তা জানান, ঘাটে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার কিছু পরে ওই ব্যবসায়ী ঘাটের দিকে যাচ্ছেন। গাড়ি থেকে দু’লাইনের একটি নোট উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন। পুলিশ জানিয়েছে, নোটে আরও বলা হয়েছে, তিনি বিপুল ইএমআইয়ের কবলে পড়েছিলেন। তবে তাঁর ব্যবসা ভালই চলছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই ঘাট থেকে নিখোঁজ হওয়ার আগে সন্দীপনের গাড়ি দু’বার স্ট্র্যান্ড রোডের গোয়ালিয়র ঘাটে চক্কর কেটেছে বলেও জানা গিয়েছে।
শুক্রবার ব্যবসায়ীর আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, কেউ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাসনের এক কর্মীর দাবি, ‘‘আবাসনের খাতায় লেখা রয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে স্যরের (সন্দীপন) গাড়ি আবাসন থেকে বেরিয়েছে। তবে গাড়িতে স্যর ছিলেন কি না, বলতে পারব না।’’ সন্দীপন খুব ভাল মানুষ ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই কর্মী। সন্দীপনের স্ত্রীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই।’’ এ নিয়ে কথা বলতে চাননি গাড়িচালক সুজিত মাহাতোও।
সল্টলেকের বাসিন্দা আনন্দ গোয়েলের সঙ্গে পাঁচ বছরের বন্ধুত্ব সন্দীপনের। আনন্দ জানান, পিডব্লিউডি-র কন্ট্র্যাক্টর ছিলেন সন্দীপন। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁর ছেলে জানিয়েছিল, স্ত্রীকে চুল কাটতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিলেন সন্দীপন।’’