প্রতীকী ছবি।
বছর ১৪-র কিশোরটি একটা সময়ের পর থেকে নিজেকে ‘মেয়ে’ বলে মানতে শুরু করেছিল। আর তা প্রকাশ করতে লম্বা চুল রাখতে শুরু করে। মায়ের তা পছন্দ হয়নি। তাই এক রাতে ঘুমন্ত ছেলের চুল কেটে দেন মা। মায়ের এই আচরণে পরের দিনই ওই কিশোর আত্মঘাতী হয়।
ঘটনাটি ঘটেছিল চোদ্দো বছর আগে কলকাতার সোনাগাছিতে। তার পরে এখনও সমাজ রূপান্তরকামী বা হিজড়েদের মেনে নিতে পারেনি পুরোপুরি। এখনও অনেক পরিবারের কোনও সদস্য তৃতীয় লিঙ্গের বলে পরিচয় দিতে চাইলে তাঁকে হেনস্থার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ।
হিজড়ে বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজনকে মর্যাদা দিয়ে আজ, ২০ নভেম্বর ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সজেন্ডার ডে অব রিমেমব্রান্স’ পালন করতে চলেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সজেন্ডার হিজড়া ইন বেঙ্গল (এটিএইচবি) ও পুরুষালি মেয়েরা। যা প্রথম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে আমেরিকায়। এ রাজ্যে শুরু গত বছর।
হিজড়েদের নিয়ে রাজ্যের মনোভাবে ক্ষুব্ধ এটিএইচবি এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সদস্য রঞ্জিতা সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘সোনাগাছির সেই কিশোরের আত্মহত্যার খবর জানার পরেই এটিএইচবি যাত্রা শুরু করেছিল নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ছবিটা বদলায়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজও কোনও পুরুষ নিজেকে মেয়ে কিংবা মেয়ে নিজেকে পুরুষ মনে করলে সমাজ-পরিবার মেনে নেয় না। রাস্তাঘাটে, রেস্তরাঁয় হেনস্থার শিকার হই আমরা। সে দিনও অত্যাচারের হার যা ছিল, আজও তাই। অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে।’’
তা হলে দিনটি পালনের তাৎপর্য?
রঞ্জিতার বক্তব্য, সমাজের মানুষজনকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য আমাদের জড়ো হওয়া। যাতে তাঁরা পুরুষ-মহিলাদের পাশাপাশি আমাদের মতো তৃতীয় লিঙ্গকেও সম্মান জানানোর জন্য সরব হন।