এই বাইকের ধাক্কাতেই ঘটে অঘটন। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র
অটো থেকে নেমে রাস্তা পেরোনোর জন্য একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বৃদ্ধা। সেই সময়ে বেপরোয়া গতিতে আসা মোটরবাইকের ধাক্কায় মৃত্যু হল তাঁর। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ, গরফা থানা এলাকার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টরের গাঙ্গুলিপুকুরের কাছে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধার নাম মীরা দাস (৬৭)। বাড়ি যাদবপুরের বিবেকনগরে।
এই ঘটনায় পুলিশ ওই মোটরবাইকের চালককে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম হরিন্দর সিংহ। বাড়ি গরফার নস্করপাড়া লেনে। ধৃত যুবক দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
বুধবার বিবেকনগরে ওই বৃদ্ধার বাড়ি গিয়ে দেখা যায় যে, বাড়ি তালা বন্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, স্কুলশিক্ষিকা মেয়ের সঙ্গে থাকতেন মীরাদেবী। মঙ্গলবার তাঁর ভাই এবং ভ্রাতৃবধূর সঙ্গে কোন্নগরে বোনের বাড়িতে এক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মীরাদেবী। সন্ধ্যায় সেখান থেকেই ফেরার
পথে যাদবপুর থানা থেকে গাঙ্গুলিপুকুর যাওয়ার অটোতে ওঠেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, গাঙ্গুলিপুকুরের কাছে কে কে মেমোরিয়ালের কাছে অটো থেকে নামেন তাঁরা তিন জন। মীরাদেবীর ভাইয়ের বাড়ি কাছেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, অটো থেকে নেমে রাস্তা পেরোবেন বলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মীরাদেবী। সে সময়ে বেপরোয়া গতিতে এসে মোটরবাইকটি তাঁকে ধাক্কা মারলে তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে তাঁর। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যেরা স্থানীয়দের সাহায্যে ওই বৃদ্ধাকে প্রথমে ই এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে এসএসকেএমে নিয়ে যান। সেখানেই পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
এ দিন মীরাদেবীর প্রতিবেশী মৌসুমী মুখোপাধ্যায় জানান, অটো থেকে নেমে রাস্তা পার করে দেবেন কি না, মীরাদেবীকে তা জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর ভাই। কিন্তু ওই বৃদ্ধা জানিয়েছিলেন, তিনি প্রায়শই এই রাস্তা পারাপার করে থাকেন। তাই কোনও অসুবিধা হবে না। এর পরেই ঘটে ওই দুর্ঘটনা।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে অভিযুক্ত ওই চালককে প্রথমে আটক এবং পরে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার বাইকটিও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, মোটরবাইকটির গতি এতটাই বেশি ছিল যে চালক সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ফলে সেটি সোজা গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে ধাক্কা মারে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক বিভাগের ফেটাল স্কোয়াডের হাতে। দুর্ঘটনাটি ঠিক কী ভাবে ঘটেছে, তা জানতে ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তারা।