চিৎপুরের পর এ বার ভবানীপুর। আইনজীবীর পর কাপড়ের ব্যবসায়ী। ফের শহর থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকার অচল নোট। সোমবার সন্ধ্যায় ভবানীপুরের লি রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা বাতিল হওয়া পাঁচশো ও হাজারের নোটে চার কোটি ১৫ লক্ষ সাত হাজার টাকা উদ্ধার করেছেন। ৩ মার্চ চিৎপুরের এক আইনজীবীর গাড়ি থেকে বাতিল হওয়া পাঁচশো ও হাজারের নোটে ৬৪ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ জানান, লি রোডে উদ্ধার হওয়া পাঁচশো টাকার বাতিল নোটের সংখ্যা ৫০ হাজার ১৬০ ও হাজার টাকার বাতিল নোট ১৬ হাজার ৪২৭। ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ীর নাম অশোক সুরানা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’’ কোথা থেকে তিনি টাকা পেয়েছিলেন ও কেনই বা এখনও ওই টাকা তাঁর কাছে ছিল, সেটা জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, অশোক সুরানার দাবি, ওই টাকা তাঁর ব্যবসা থেকে আয়, যদিও এর প্রমাণ হিসেবে তিনি নথি দেখাতে পারেননি।
বাতিল নোট ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ৩১ ডিসেম্বর। কেবল গত ৯ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে ছিলেন না, এমন অনাবাসী ভারতীয়রা ও সাধারণ ভারতীয়রা যথাক্রমে ৩০ জুন ও ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যাঙ্কে অচল নোট বদলে নিতে পারবেন। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, এই সুযোগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অন্দরে এক অসাধু চক্র কমিশনের বিনিময়ে অচল নোট বদলে দিচ্ছে। লি রোডের ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই চক্রের যোগ ছিল কি না তা দেখা হচ্ছে। আয়কর বিভাগের অফিসাররা মঙ্গলবার ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন।
গোয়েন্দারা জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার গুন্ডাদমন শাখা ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা তিনটি গাড়িতে করে লি রোডের ওই ফ্ল্যাটে হানা দেন। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর ফ্ল্যাটের একাধিক আলমারিতে রাখা ওই সব বাতিল নোট পাওয়া যায়। অশোক সুরানাকে রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে ফের তাঁকে লালবাজারে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। রাত ৮টার পর তিনি ফের বাড়িতে যান।
গোয়েন্দারা জানান, ২৪ নম্বর লি রোডে সাততলা বাড়ির সবচেয়ে উপরের তলে অশোক সুরানার ফ্ল্যাট। এ দিন দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, ওই বহুতলের সদর ফটকের সামনে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন। বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।