—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দিনভর ঝলসানো গরমে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা শহরবাসীর। সেই সঙ্গে গত বছরের ভোগান্তির কথা মনে করিয়ে ফের দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের ‘অসুখ’। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ— সর্বত্রই দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ। গত বছরের মতো এ বারও বিদ্যুৎ-বিভ্রাট তাপপ্রবাহের সঙ্গী কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে বার বার। তার মধ্যেই শনিবার ফের গভীর রাতে উত্তরের সিঁথি এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখে পড়লেন বাসিন্দারা। রবিবার বিকেলে একই ভোগান্তির শিকার হলেন নিউ গড়িয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সংলগ্ন ঢালুয়া, শ্রীনগর এলাকার বাসিন্দারাও।
যদিও আগের মতো এ দিনও সিইএসসি-র তরফে দাবি করা হয়েছে, অনুমোদনহীন এসি-র অতিরিক্ত লোডের কারণে কলকাতা সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত দু’-একটি ওভারলোডিংয়ের ঘটনা ঘটছে। তবে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কর্মীরা দ্রুত সেখানে গিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করেছেন বলে দাবি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার। যদিও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাঁদের অভিজ্ঞতা একেবারেই তেমন নয়।
শনিবার রাত একটা নাগাদ সিঁথির কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে দিনভর তীব্র গরমের পরে রাতটুকুও নির্ঘুম কেটেছে অনেকেরই। সিঁথির কয়েক জন বাসিন্দা জানাচ্ছেন, অসহ্য গরমে সে সময়ে অনেকেই রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ বিদ্যুৎ এলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ভুক্তভোগীরা। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সারা দিন গরমে কাজ করে, ঘেমেনেয়ে মারাত্মক ক্লান্ত লাগে। যদি রাতেও বিদ্যুৎ না থাকে, তা হলে তো ঘুমটাও ঠিক মতো হয় না। শনিবার রাতে টানা বিদ্যুৎ না থাকায় বয়স্কদের কেউ কেউ অসুস্থ বোধ করেছেন।’’
একই দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখে পড়েন দক্ষিণ কলকাতার নিউ গড়িয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সংলগ্ন ঢালুয়া শ্রীনগরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারাও। রবিবার বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেখানে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছিল কয়েক দিন ধরে। কিন্তু টানা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণে অনেকেরই ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। রাত ৮টায় বিদ্যুৎ এলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফের চলে যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বাড়িতে অসুস্থ মানুষ রয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় উনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। খুবই অসহায় লাগছিল। রাত
৮টায় বিদ্যুৎ আসার পরে ভাবলাম, হয়তো স্বস্তি মিলল। কিন্তু রাত ৯টায় আবার বিদ্যুৎ চলে যায়! সিইএসসির জেনারেটরের মাধ্যমে রাত ১০টায় নাগাদ বিদ্যুৎ ফেরে।’’
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, অনেকের নিজস্ব পোর্টেবল জেনারেটর থাকলেও বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের সময়ে সেগুলির বেশির ভাগই কাজ করছে না। কারণ, এত দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত সমস্যা না থাকায় অনেকেই জেনারেটরের ব্যাটারি পাল্টাননি। ফলে ব্যাটারি কমজোরি হয়ে এখন আর তা কাজ করতে পারছে না।