—ফাইল চিত্র।
রোগী নয়, রোগকে দূরে সরানোর কথা যতই শুনতে শুনতে মুখস্থ হয়ে যাক, কোভিড রোগী নিয়ে সার্বিক সচেতনতায় এখনও ঢের খামতি রয়েছে। এ বার সেই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে শহরের একটি পুজো মাঠে নামছে। রবিবার হরিদেবপুরের বিবেকানন্দ পার্কের একটি ক্লাবের পুজো তেমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।
কোভিডের সংক্রমণের মাত্রা যেমনই হোক, রোগীর প্রতি ছুতমার্গ কমবেশি অনেকেরই জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। এত দিনে অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। রোগীর স্পর্শের ভয়ে পুলিশ-স্বাস্থ্যকর্মীরাও অনেক সময়েই এগিয়ে আসছেন না। সেই সঙ্গে কোভিড রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবসাও এখন দেশে উদ্বেগের বিষয়। যা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত কোভিড অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া বেঁধেও দিতে বলেছে। এই অবস্থায় পাড়ার লোকের মুশকিল আসান করতে এগিয়ে এসেছে হরিদেবপুরের ওই পুজো কমিটি। পুজোর বাজেট কম করে তারা পাড়ার লোকের জন্য কোভিড অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেছে। এই পরিষেবা হবে নিখরচায়। পুজোকর্তা সত্যব্রত সামন্ত এ দিন বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের চালক, সহকারীর জোগাড় করা এবং সুরক্ষার ব্যবস্থা ঠিক করাও চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে গাড়ি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করে রাখার পরিকাঠামোও তৈরি করা হয়েছে।’’
হরিদেবপুরের বিবেকানন্দ পার্কের থিম-শিল্পী সুশান্ত পাল এ বার কার্যত নিখরচায় কাজ করছেন। পুজোর আয়োজনও যৎসামান্য। সত্যব্রতবাবু বলছেন, ‘‘এ বছর আমাদের পুজোর ৫০ বছর পূর্তি। এর জন্য আগে থেকেই কিছু আলাদা বাজেটের বন্দোবস্ত ছিল। সবটাই প্রায় সামাজিক কাজ বা কোভিড মোকাবিলায় কাজে লাগছে।’’ এমনিতে রাজ্যে ক্লাবগুলিকে সরকারি অনুদান দেওয়া নিয়ে নানা সমালোচনা শোনা যায়। এই পুজোটির কর্তারা জানাচ্ছেন, কোভিড প্রতিরোধে এগিয়ে আসাই তাঁদের তরফে সমাজকে কিছুটা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও বলছেন, পুজোয় আয়োজনের বাড়াবাড়ির বদলে এ বছর মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই প্রকৃত পুজো। পুজো কমিটির তরফে এলাকার ভবঘুরে ও ভিক্ষাজীবীদের মাস্ক বিলির উদ্যোগও শুরু হয়েছে। এ বার খুঁটি পুজো করেননি পুজোকর্তারা। পুজোর সময়েও এলাকায় ভিড় কমিয়ে বার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা।