ছবি পিটিআই।
সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় কলকাতা থেকে বন্ধ করা হয়েছে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই-সহ দেশের ছ’টি শহরের উড়ান। কিন্তু তার পরেও এমন বহু যাত্রী শহরে এসে নামছেন যাঁদের জ্বর এবং অন্য উপসর্গ রয়েছে।
গত সাত দিনে হায়দরাবাদ, পটনা, বেঙ্গালুরু এমনকি বাগডোগরা থেকেও আসা ওই যাত্রীদের তড়িঘড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। সেখানে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু ওই যাত্রীদের মধ্যে কেউ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন কি না, জানতে পারেননি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে সেই তথ্য জানানো হচ্ছে না।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, কলকাতায় আসা কোনও যাত্রীর দেহে সংক্রমণের কথা জানা গেলে তিনি যে উড়ানে এসেছিলেন, সেই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর সহযাত্রীদের তথ্য বার করা নিয়ম। ধরা যাক, বেঙ্গালুরু থেকে আসা কোনও যাত্রীর যদি করোনা হয়ে থাকে এবং তিনি যদি বিমানের ৬সি আসনে বসে আসেন, তা হলে সেটির আগের ও পরের মোট ছ’টি সারির যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা উড়ান সংস্থার। ফোন করে তাঁদের সতর্ক করার পাশাপাশি বাড়িতেই কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, রাজ্য কোনও তথ্য না-দেওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: লকডাউনের নিয়মে ফিরল একাধিক আবাসন
যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা দাবি করেছেন, নিয়মিত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। তাঁর মত, যে সব বিমানবন্দর থেকে এমন যাত্রীরা আসছেন, তাদেরই সতর্ক করা উচিত।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সহযাত্রীর সংক্রমণ নিয়ে এখন আর ভাবার মতো অবস্থায় রাজ্য নেই। গত ২৮ মে কলকাতা থেকে দেশীয় উড়ান চালু হওয়ার পরপরই এটা করা সম্ভব হচ্ছিল। কারণ, তখন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল অনেক কম। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ওই কর্তা বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা এতই বেড়ে গিয়েছে যে, তাঁদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কার্যত কোনও জায়গা নেই। সব চাপ সরকারি হাসপাতালের উপরে পড়ছে। ফলে এখন সংক্রমিত বিমানযাত্রীর আশপাশের আসনে বসে যাঁরা শহরে এসেছেন, তাঁদের আর খুঁজে বার করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট যাত্রী বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরে তাঁর যদি মনে হয় শরীরে উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তিনি নিজে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’’
আরও পড়ুন: শয্যা না-বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, এই রাজ্য তো বটেই, অন্য রাজ্যের কোনও পরীক্ষাগারে করোনার পরীক্ষা করালে এবং রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে সেই পরীক্ষাগার থেকেই স্বাস্থ্য দফতরে ইমেল করে রিপোর্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিমানযাত্রীর তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই যাত্রী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে চান কি না, রাজ্যের তরফে যোগাযোগ করে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে এনে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। অনেকে বেসরকারি হাসপাতালেও ভর্তি হতে চাইছেন। তাঁরা নিজেদের মতো ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য ভবনে বসে রাজ্য সরকারের যে চিকিৎসক এবং অফিসারেরা এই কাজ করছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ১৩ জন ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে, অনেকেই এই সংযোগ স্থাপনের কাজটা করছেন বাড়িতে বসে।