প্রতীকী ছবি।
কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে খুনের ঘটনার বাইশ বছর পরে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করল আলিপুর আদালত। অভিযুক্তের নাম অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অজয় সিংহ।।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। ওই রাতে সওয়া ১১টা নাগাদ শ্যামবাজার থেকে একটি দোতলা বাস বরাহনগরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ে বি টি রোডে ডিউটি করছিলেন ট্র্যাফিক কনস্টেবল সুরেন্দ্রপ্রসাদ গুপ্ত। আসার পথে বাসটি যানজটে বেশ কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময়ে বাসের দোতলায় গোলমাল শুনে সেখানে যান সুরেন্দ্রবাবু। গিয়ে দেখেন, নারায়ণ রায় নামে তাঁরই এক সহকর্মীর সঙ্গে কয়েক জন যাত্রীর বচসা চলছে। সুরেন্দ্রবাবু মধ্যস্থতা করতে গেলে উত্তেজিত যাত্রীরা তাঁর এবং নারায়ণবাবুর উপরে চড়াও হয়। ইতিমধ্যে বাসটি ছেড়ে দেয়। ওই দুই পুলিশকর্মী সিঁড়ি দিয়ে নেমে বাসের দরজার কাছে চলে আসেন। অভিযোগ, চিৎপুর থানা এলাকার চুনিবাবুর বাজারের কাছে সুরেন্দ্রবাবু ও নারায়ণবাবুকে ধাক্কা মেরে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারাই গুরুতর জখম অবস্থায় দুই পুলিশকর্মীকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই গভীর রাতে মারা যান সুরেন্দ্রবাবু। হাসপাতালে দীর্ঘদিন ভর্তি থাকার পরে ছুটি দেওয়া হয় নারায়ণবাবুকে। ঘটনার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ।
ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মাস পরে গ্রেফতার করা হয় বরাহনগর থানা এলাকার বাসিন্দা অনুপমকে। তার বিরুদ্ধে খুনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। মাসচারেক পরে অনুপমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
তবে, কয়েক মাস পরেই জামিন পায় অনুপম। সরকারি আইনজীবী আকবর আলি মোল্লা এ দিন বলেন, ‘‘ঘটনার মূল সাক্ষী নারায়ণ ঘোষ। তিনি ছাড়া আরও দু’জন এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।’’ এ দিনই অনুপমকে জেল হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী।