আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে শামিল পড়ুয়াদের একাংশ। নিজস্ব চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে শামিল পড়ুয়াদের একাংশ। মঙ্গলবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। অভিযোগ, ৬৩ দিন ধরে তারা উপাচার্যের দাবিতে সরব। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সেই কারণে এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় আট মাস ধরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ ফাঁকা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাজ আটকে রয়েছে। এই মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন রেজিস্ট্রার। কিন্তু তাঁর কাছে গেলেই শুনতে হচ্ছে, ‘‘উপাচার্য নেই। এখন কাজ হবে না।’’ উপাচার্য কবে আসবেন? মিলছে না সেই প্রশ্নের উত্তরও। এর ফলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বহু পড়ুয়া। প্রজেক্ট জমা থেকে শুরু করে বিদেশযাত্রার সার্টিফিকেট, স্কলারশিপ— কোনও কাজই এগোচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে স্থায়ী উপাচার্য নেই। উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। রাজ্য রাজভবন সংঘাতে তাই ঝুলেই রয়েছে উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভুগতে হচ্ছে।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র নাসিম নওয়াজ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এ দিকে, উপাচার্য না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। কেউ প্রজেক্ট জমা দিতে পারছেন না। কারও বিদেশযাত্রা আটকে আছে। আমাদের ইসলামিক স্টাডিজ়ের কয়েক জন ছাত্র প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বিএডে বসতে পারছেন না। আমরা গত ৬৩ দিন ধরে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছি। কোনও সুরাহা না হওয়ায় সোমবার থেকে ছাত্রেরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক বন্ধ করে দিয়েছেন। উপাচার্য না থাকায় সব কাজ যখন আটকে যাচ্ছে, তা হলে আর ক্যাম্পাস খুলে লাভ কী?’’
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাস আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। আগামী দিনে তালতলা ক্যাম্পাস এবং নিউ টাউন ক্যাম্পাসেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে এই মুহূর্তে অফিসের কাজকর্ম চললেও ক্লাস বন্ধ ছিল। ১০ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। পাশাপাশি চলছে ভর্তির প্রক্রিয়াও। ছাত্রবিক্ষোভের জেরে সেই প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ছাত্রেরাও অনড়। উপাচার্য নিয়োগ না করা হলে তাঁরা ক্যাম্পাস খুলতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন।