ফাইল চিত্র।
হাত ধোয়ার বেসিনে পা তুলে দিয়ে ধুচ্ছেন বয়স্ক যাত্রী। কলকাতা বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্ন টার্মিনালের সেই ছবি বিমানবন্দরেরই টুইটার অ্যাকাউন্টে দিয়ে আর এক যাত্রীর মন্তব্য— ‘বিমানবন্দরে বাড়তি নজরদারির প্রয়োজন।’ সেই টুইটের নীচেই অন্য এক ব্যক্তির মন্তব্য —‘দয়া করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
কলকাতায় শৌচালয়ের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। দু’টি বেসরকারি সংস্থাকে শৌচালয় সাফাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বেসিনে পা ধোয়াই শুধু নয়, সেই পা মুছতে ব্যবহার করা হয় মুখ মোছার জন্য রাখা টিসু পেপার। অভিযোগ, যাত্রীদের অনেকেই টিফিন কৌটো থেকে খাবার খাওয়ার পরে শৌচালয়ে গিয়ে হাত ধোয়ার তরল সাবান দিয়ে সেই কৌটো পরিষ্কার করেন। এক সাফাইকর্মীর অভিযোগ, ‘‘অনেকটা লিকুইড সোপ টিফিন বক্সে ভরে নিয়ে যেতেও দেখেছি।’’
আরও অভিযোগ, কমোড ব্যবস্থায় অভ্যস্ত নন, এমন অনেকেই কমোডের উপরে পা তুলে বসে নিত্যকর্ম সারেন। এমন যাত্রীও রয়েছেন, যাঁরা মেঝেতেই নিত্যকর্ম সেরে ওই অবস্থায় বেরিয়ে চলে যান। সাফাইকর্মীদের তা পরিষ্কার করতে হয়। অনেকে আবার কমোড শাওয়ার ব্যবহার করে স্নানও সেরে নেন। ফলে শৌচালয়ের মেঝে জলে ভরে যায় এবং অন্য যাত্রীদের জুতোর ধুলোয় তা কাদার চেহারা নেয়। এ ছাড়া, কমোড শাওয়ার ভেঙে ফেলা, শৌচালয়ের যত্রতত্র পানেক পিক ফেলা, ইউরিনাল থাকা সত্ত্বেও মেঝেতে বা শৌচালয়ের দেওয়ালে প্রস্রাব করা, পেপার ন্যাপকিন দিয়ে জুতো মোছার অভিযোগও উঠেছে যাত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে।
কলকাতা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন অভিজিৎ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘এটা মূলত গুয়াহাটি আর কলকাতায় দেখেছি। মুম্বই বা বেঙ্গালুরুতে এ দৃশ্য দেখা যায় না। আমি কলকাতায় দেখেছি, এক জন শৌচালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে মেঝেতে জল আর টয়লেট পেপার পড়ে রয়েছে। ইউরিনালের উপরেও পেপার ফেলে দেন অনেকে।’’ কলকাতা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা আর এক যাত্রী সুজিত চন্দ্র বলেন, ‘‘এখন সস্তার উড়ানের ছড়াছড়ি। দেড়-দু’হাজার টাকাতেও টিকিট পাওয়া যায়। ফলে সব ধরনের মানুষই আজকাল উড়ানে চড়েন। কোনটা করা যায়, আর কোনটা করা যায় না, সেই বোধটাও সকলের থাকে না। শৌচালয়ে ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও অনেকে পেপার ন্যাপকিন দিয়ে মুখ মুছে সেটি হয় মেঝেতে, নয়তো ইউরিনালে ফেলে চলে যান।’’