প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। প্রতিষেধক দেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। দূরত্ব-বিধি উপেক্ষা করে সভা থেকে মিছিল, সবই চলছে। কিন্তু শহরের ছ’টি এবং জেলার একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও অফলাইনে পঠনপাঠন শুরু হয়নি। সেই কারণে প্রথম বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়ারা হাতেকলমে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন না। তাঁদের সেই সুযোগ দেওয়ার দাবিতেআজ, মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেবে চিকিৎসক পড়ুয়াদের সর্বভারতীয় সংগঠন এআইডিএসও।
সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য, চিকিৎসক কবিউল হক বলেন, ‘‘রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজে অফলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়েছে। কিন্তু মোট সাতটি জায়গায় এখনও তা হয়নি। যার ফলে এমবিবিএসের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা হাতেকলমের শিক্ষা থেকে চূড়ান্ত ভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এই বৈষম্য দূর করে ওই সাতটি কলেজেও সশরীরে উপস্থিত হয়ে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হোক।’’ তিনি জানান, গত বছরের অগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে এমবিবিএসের প্রথম বর্ষের পঠনপাঠন চালু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। জানুয়ারিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছিল, পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে অফলাইন ক্লাস চালু হবে। তার জন্য খুলে দেওয়া হয় হস্টেলও।
কিন্তু তার পরেও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, আর জি কর, এন আর এস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, কামারহাটি সাগর দত্ত ও বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস এবং বিডিএসের (ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি) অফলাইন ক্লাস কেন চালু হল না, তা নিয়েই সরব হয়েছে এআইডিএসও। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, অ্যানাটমি, বায়োকেমিস্ট্রি, ফিজ়িয়োলজি-র মতো বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণই আসল। কিন্তু তার সুযোগ পাচ্ছেন না প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা। শহরের ছ’টি ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ মিলিয়ে প্রায় ১৩০০ জন পড়ুয়া বঞ্চিত হচ্ছেন। কবিউলের কথায়, ‘‘অনলাইন ক্লাসে হাজারো সমস্যা হচ্ছে। বোর্ডের লেখা অনেক সময়েই অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে পড়ুয়াদের সামনে। এক বার লিঙ্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পুনরায় যুক্ত হতে হাজারো সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময়ে নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্লাস বিঘ্নিত হচ্ছে।’’
এর আগেও বেশ কয়েক বার রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এআইডিএসও। সংগঠনের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, এ বার অনলাইনে স্মারকলিপিতে সই করানো হয়েছে। সেটা জমা দেওয়ার পাশাপাশি বিক্ষোভও দেখানো হবে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ক্লাস অবশ্যই হচ্ছে। কোভিড-বিধি মানতেই কিছু মেডিক্যাল কলেজে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সর্বত্রই অফলাইনে ক্লাস চালু হবে।’’