হাল না পাল্টেই খুলছে চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনাল

ইঙ্গিতটা আগেই বোঝা যাচ্ছিল। এ বার সেটাই স্পষ্ট হল। শহরের বিপজ্জনক বাড়ির মতো অগ্নিবিধি না-মানা বাড়ির বিষয়েও যে পুর কর্তৃপক্ষ ‘মানবিক’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলতে চান, তা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে আগুন লাগার দিনেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। তার তিন দিনের মধ্যেই দমকলের তরফেও ওই বহুতলের বেশির ভাগ অফিস খোলার ছাড়পত্র চলে এল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০০
Share:

ইঙ্গিতটা আগেই বোঝা যাচ্ছিল। এ বার সেটাই স্পষ্ট হল। শহরের বিপজ্জনক বাড়ির মতো অগ্নিবিধি না-মানা বাড়ির বিষয়েও যে পুর কর্তৃপক্ষ ‘মানবিক’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলতে চান, তা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে আগুন লাগার দিনেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। তার তিন দিনের মধ্যেই দমকলের তরফেও ওই বহুতলের বেশির ভাগ অফিস খোলার ছাড়পত্র চলে এল। আগুন লাগার চার দিনের মধ্যে আজ, শনিবার ২২ তলা বহুতলটির বেসমেন্ট থেকে ১৪ তলা পর্যন্ত সব অফিস খুলে দেওয়ার কথা।

Advertisement

অথচ, ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। যে পরিস্থিতিতে বহুতলে আগুন লাগে এবং আগুন নেভাতে দমকল হিমশিম খায়--- সেই পরিস্থিতি এখনও বহাল। দমকলের অধিকর্তা গৌরপ্রসাদ ঘোষ শুক্রবার বলেন, “বিদ্যুৎ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ বহুতলটির অবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। শর্তসাপেক্ষে আপাতত বেশির ভাগ অফিস খুলে দেওয়া হচ্ছে।” তবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫, ১৬ ও ১৭ তলা বন্ধ থাকছে। উপরের তলাগুলিতেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায়নি। তাই উপরের অফিসগুলিও বন্ধ থাকারই সম্ভাবনা।

দমকলের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিন মাসের মধ্যে বহুতলটির সব তলায় সিসিটিভি-র ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া, বহুতলটির সুরক্ষায় আগুন নেভানোর তালিমপ্রাপ্ত অন্তত ২০ জন পেশাদার কর্মী নিয়োগ, প্রতিটি তলায় অন্তত ২০টি আগুন নেভানোর যন্ত্র, বিপদঘণ্টি ও স্প্রিঙ্কলার ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

কলকাতার আরও বেশ কিছু অফিসবাড়ি, বাজার বা শপিংমলের মতো এই বহুতলটির বিষয়েও দমকলের অভিজ্ঞতা অবশ্য সুবিধাজনক নয়। স্টিফেন কোর্টের ঘটনার পরেই চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু সুপারিশ করে প্রশাসনিক কমিটি। সেই মতো কয়েকটি পদক্ষেপ করা হলেও তা যে যথেষ্ট ছিল না, এখন মানছেন দমকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে বুঝতে ফের একটি অঘটন ঘটে গিয়েছে চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে। দমকলকর্তারাই মানছেন, এ যাত্রা সাতসকালে আগুন না-লেগে ভরা অফিসটাইমে কিছু ঘটলে প্রাণহানি এড়ানো মুশকিল হতো। তবু এ বারও শর্তসাপেক্ষে আগুন মোকাবিলার ব্যবস্থা পুরোপুরি না-শুধরোতেই ছাড় দিচ্ছে দমকল।

বহুতলের বিভিন্ন অফিসের কর্তারা অবশ্য তেমন ঝুটঝামেলা ছাড়াই অফিসে ফিরতে পেরে খুশি। বহুতলের সোসাইটির তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিদ্যুৎ, দমকল, পুরসভা ও পুলিশের আধিকারিকেরা চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনাল পরিদর্শনে যান। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁরা ওই বহুতলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তাঁরা ছাড়পত্র দিতেই বহুতলটির ১৪তলা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ফের চালু করেছে সিইএসসি। তবে এখনও পাঁচটি লিফ্টের তিনটিই অকেজো। বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা দু’টি লিফ্টকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। বাকি তিনটি লিফ্টের কিছু মেরামতি এখনও দরকার। কয়েক দিনের মধ্যে সেগুলিও চালু হওয়ার কথা।

এ বারের অগ্নিকাণ্ডের পরে প্রাণহানি বা বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতির বিপদ এড়াতে দমকলকর্তারা অবশ্য সবার আগে বহুতলে যত্রতত্র রাত্রিবাস ও আগুন জ্বেলে রান্নাবান্না বন্ধ করতে চান। সিসিটিভি বিষয়ে বহুতলে রাতবিরেতে লোকজনের উপরে নজরদারিও চালু রাখতে চায় দমকল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement