নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র
আড়াই বছরের শিশুকে নিয়ে পাঁচ হাসপাতালে ঘোরার পরে শেষমেশ তাকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাতে পেরেছিলেন বাড়ির লোকজন। দীপ সাধুখাঁ নামে ওই শিশুর পরিবার এ বার
অভিযোগ করল যে, গত বুধবার ভর্তির পর থেকেই বার বার রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের তরফে। তবে দীপের বাবা সৌরভ সাধুখাঁর দাবি, এন আর এস থেকে যদি শহরের অন্য কোনও সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার যথাযথ ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, তবেই তাঁরা অন্যত্র যেতে রাজি। কারণ, প্রথম বারের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে আর ভোগান্তির মধ্যে পড়তে রাজি নন তাঁরা। তবে এন আর এস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত সপ্তাহের বুধবার থেকে এন আর এস হাসপাতালের সেন্টেনারি ভবনের সাততলার অবজ়ারভেশন রুমে ভর্তি রয়েছে দীপ। হাসপাতালে তার সঙ্গেই রয়েছেন মা প্রিয়াঙ্কা সাধুখাঁ। হাসপাতালের সামনেই ছোট ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছেন দীপের বাবা-সহ অন্য আত্মীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, গত সপ্তাহে দীপকে ভর্তি না নেওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ায় তাকে ভর্তি করা হলেও রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রথম দু’দিন এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। তার পর থেকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। দীপের পরিবারের দাবি, বার বার সংক্রমণের কথা বলে অন্যত্র যেতে বলা হচ্ছে। আরও অভিযোগ, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ প্রিয়াঙ্কাকে দিয়ে একটি বন্ডেও সই করানো হয়েছে।
দীপের বাবার দাবি, ‘‘প্রথমে এসএসকেএম এবং পরে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়। সেখানে চিকিৎসার ভাল ব্যবস্থা হলে আমরা নিয়ে যেতে রাজি আছি। তবে এখান থেকে যদি অন্য হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, একমাত্র তা হলেই ওকে নিয়ে যাব।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার পরে যদি অন্য হাসপাতাল ভর্তি না নেয়, সে ক্ষেত্রে ছেলের কী হবে?’’
যদিও এন আর এস থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের সুপার ইন্দিরা দে। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চাটির বিষয়ে সকালেই খবর নিয়েছি। প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ থেকে প্রতিদিন ওর ড্রেসিং করা হচ্ছে। সে এখন অনেকটাই ভাল আছে।’’
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার বিকেলে দেগঙ্গার কলসুরের বাসিন্দা দীপের গায়ে গরম জল পড়ে যায়। প্রথমে বাউগাছি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে রাতে দীপকে পাঠানো হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। ওই রাতেই বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে ফুলবাগান শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেখানে ভর্তি করানো হলেও বুধবার দুপুরে ফুলবাগান থেকে আর জি কর এবং পরে আর জি কর হাসপাতাল থেকে এন
আর এস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় দীপকে। বুধবার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও প্রথমে ভর্তি করানো যায়নি তাকে। পরে বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় দীপকে ভর্তি নেওয়া হয়।