তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় এক কোটি তিন লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। প্রতীকী ছবি।
পার্ক স্ট্রিটে একটি গাড়ি থেকে এক কোটি তিন লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এ বার সন্ধান মিলল বেশ কয়েকটি ভুয়ো সংস্থার। সেই সংস্থাগুলির মাধ্যমেই হাওয়ালায় নগদ টাকা লেনদেন করা হয়েছিল। টাকা উদ্ধারের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনই দাবি পুলিশের। উদ্ধার হওয়া টাকাও হাওয়ালার বলে পুলিশের অনুমান। যা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন রাজেশ আগারওয়াল, যিনি পরে গ্রেফতার হন।
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, ওই সংস্থাগুলির মালিক রাজেশ। এখনও পর্যন্ত ২০টি ভুয়ো সংস্থার হদিস মিলেছে। সংস্থাগুলি কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। পুলিশের ধারণা, রাজেশকে জেরা করা হলে আরও ভুয়ো সংস্থার সন্ধান মিলতে পারে।
এ দিকে, আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতে ধৃত রাজেশের নিউ আলিপুরের নলিনীরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান লালবাজারের তদন্তকারীরা। গভীর রাত পর্যন্ত সেই তল্লাশি চলেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রাজেশের বাড়িতে এর আগে আয়কর দফতর তল্লাশি চালিয়েছিল। সেই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে লালবাজার। রাজেশকে মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন।
সোমবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখার তদন্তকারীরা পার্ক স্ট্রিটে একটি গাড়ি থামান। সেটির ভিতরে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় এক কোটি তিন লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। সেই টাকার কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গ্রেফতার করা হয় রাজেশকে। তদন্তকারীরা জানান,ধৃত রাজেশ প্রথম থেকেই পুলিশের সঙ্গে অসহযোগিতা করেছেন। তাঁর একাধিক বক্তব্যেও অসঙ্গতি মিলেছে। টাকা উদ্ধারের পরে রাজেশের দাবি ছিল, ক্যামাক স্ট্রিটের একটিসংস্থা থেকে ওই টাকা তিনি এনেছিলেন। কিন্তু গোয়েন্দাদের দল ক্যামাক স্ট্রিটের সেই অফিসে তল্লাশি চালিয়েও এর সত্যতা খুঁজে পাননি। তবে ওই অফিস থেকে কিছু নগদ টাকা পাওয়া যায়। ওই সংস্থা সেই টাকার বৈধতা সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ায় পুলিশ সেখান থেকে খালি হাতে ফিরে আসে।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তার উৎস নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে ধৃত রাজেশের সঙ্গে হাওয়ালার যোগাযোগের বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ মেলায় গোয়েন্দাদের অনুমান, ওই টাকাও হাওয়ালার। টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এবং সেই টাকার উৎস জানার জন্য পুলিশ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং আয়কর দফতরকে খবর দিয়েছে লালবাজার।