বছর ঘুরলেও জামা-জুতো এল না পুর স্কুলে

যদিও রাজ্য সরকারের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পোশাক ও জুতো দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা পেয়ে গেলেও পুর স্কুলের পড়ুয়ারা এখনও তা পেল না কেন, তা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক বছর আগেই কলকাতার তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের খাতা-পেনসিলের পাশাপাশি জামা, প্যান্ট, জুতো, মোজা ও বর্ষাতিও দেবে পুর প্রশাসন। এক বছর পার করে পরের বর্ষা চলে এল। কিন্তু আজও সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবের আলো দেখেনি। পুরসভার শিক্ষা দফতরের বক্তব্য, ওই সব সামগ্রী কেনার ব্যাপারে সরকারের নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তা মানতে গি‌য়েই কিছুটা দেরি হচ্ছে।

Advertisement

যদিও রাজ্য সরকারের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পোশাক ও জুতো দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা পেয়ে গেলেও পুর স্কুলের পড়ুয়ারা এখনও তা পেল না কেন, তা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে। এমনিতেই পুরসভার স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা কম। তাদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত পরিবার বা বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের ছেলেমেয়ে। অনেকেরই স্কুলে পড়ার সামর্থ্য নেই। তাই জামা-প্যান্ট, জুতো-মোজা ও বর্ষাতি পেলে পড়ুয়াদের ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে করেন পুরসভার শিক্ষা দফতরের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার স্কুলে নিম্নবিত্ত পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি। জামা-প্যান্ট কেনার মতো আর্থিক অবস্থাও নেই অনেকের। সেই সব ভেবেই পুর প্রশাসন তাদের জন্য জামা, জুতো, বর্ষাতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তা হলে এত দেরি হচ্ছে কেন?

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, সরকারি নিয়মে ছিল, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ওই সব সামগ্রী কেনা যেতে পারে। তবে পুরসভার শিক্ষা দফতর সরকারি নিয়ম মেনে নিজেরাই তা কিনে থাকে। অভিজিৎবাবু জানান, এ বার সেই নিয়মেই পুর শিক্ষা দফতর গোটা কয়েক দোকান থেকে তা সরবরাহ করার জন্য সরকারি এক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পুরসভা সূত্রের খবর, সেই পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি ওঠে। তাই ওই সব সামগ্রী কেনার ফাইল আটকে যায়। পরে সরকারের নতুন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অন্তত চার-পাঁচটি দোকান বা সংস্থার কাছ থেকে কোটেশন নিতে হবে। তার ভিত্তিতেই দর নির্ধারণ করতে হবে। সর্বনিম্ন যে দর মিলবে, সেই মতো বরাত দিতে হবে। অভিজিৎবাবু বলেন, নতুন নিয়ম মেনে কাজ করতে গিয়েই দেরি হচ্ছে।

কলকাতার সর্বশিক্ষা মিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়াদের বই, জুতো এবং জামা দেয় সর্বশিক্ষা মিশন। কলকাতা পুরসভার স্কুলের

পড়ুয়াদের জন্য ইতিমধ্যেই বই দেওয়া হয়েছে। জামার (পড়ুয়া-পিছু ৬০০ টাকা) জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। আর পুরসভা নিজেই জুতো দেয় বলে সর্বশিক্ষা মিশন কলকাতা পুরসভার স্কুলকে তা দেয় না।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে তাদের অধীনে ২৭১টি প্রাথমিক স্কুল, ১০২টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র এবং ছ’টি উচ্চতর প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। রাজ্য স্কুল দফতর সূত্রের খবর, পুর প্রশাসন রাজ্য শিক্ষা দফতরে আবেদন জানালে তাঁদের পড়ুয়াদের জুতোও সরবরাহ করতে পারে সর্বশিক্ষা মিশন। তাতে পড়ুয়ারা তাড়াতাড়ি জুতো পেয়ে যাবে। তবে সরকারি তরফে বর্ষাতি দেওয়া হয় না। তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার নিজস্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement