প্রতীকী ছবি
সরকারি চিকিৎসকদের বড় অংশ বেতন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় চিন্তিত। এঁরা সকলেই ‘নন-প্র্যাক্টিসিং’ পদে বহাল। অর্থাৎ যাঁরা সরকারি হাসপাতালে চাকরি ছাড়া বাইরে কোথাও প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন না। সরকারি চিকিৎসকদের ৭০-৮০ শতাংশ এই শ্রেণিভুক্ত।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের নির্দেশিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে এই চিকিৎসকেরা ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। তাঁদের মতে, সেখানে ‘এনপিপি’ বা ‘নন প্র্যাক্টিসিং পে’-কে পরিবর্তন করে ‘এনপিএ’ অর্থাৎ ‘নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স’ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এই ‘অ্যালাওয়েন্স’-এর ক্ষেত্রে যে নিয়ম করা হয়েছে, তাতে আগামী জানুয়ারিতে ‘পে ফিক্সেশন’-এর পরেই অধিকাংশ চিকিৎসকের বেতন ১০-১৫ হাজার টাকা করে কমে যাবে। সবচেয়ে বেশি বেতন কমবে অপেক্ষাকৃত প্রবীণদের, যাঁরা অনেক দিন ধরে চাকরি করছেন।
সরকারি চিকিৎসকদের বামপন্থী সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’ অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান চেয়ে ১৫ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকেও। প্রসঙ্গত, চাকরির শর্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার পদ দু’টিও নন-প্র্যাক্টিসিং। অর্থাৎ বেতন তাঁদেরও কমতে পারে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এখনই এত ভাবনার কিছু নেই। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা ব্যাখ্যা করেন, এত দিন বেতনের বেসিক-এর ৩০ শতাংশ ছিল এনপিপি। আবার এনপিপি-র উপরে ১২৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হত। সব মিলিয়ে বেতন পেতেন চিকিৎসকেরা। নতুন নিয়মে এনপিপি-টা বদলে এনপিএ হয়ে গিয়েছে। তার
উপরে আর কোনও ডিএ দেওয়া হবে না। তাতেই চিকিৎসকদের মাসিক বেতন এক ধাক্কায় কমে যাবে বলে অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, এত দিন চিকিৎসকেরা এনপিপি-র উপরে যে ১২৫ শতাংশ ডিএ পেয়ে এসেছেন তার ভিত্তিতেই নতুন বেতন নির্ধারণ হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন আদেশনামায় এনপিপি-র উপরে মাত্র ৭৫ শতাংশ ডিএ ধরে বেতন নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এতেও তাঁদের বেতন অনেক কমবে।
তৃণমূলপন্থী সংগঠন এবং ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। সূত্রের খবর, সমস্যার সমাধান না হলে তারা সকলে মিলে চিকিৎসকদের স্বার্থে আন্দোলনে নামার কথাও বিবেচনায় রেখেছেন। সরকারি চিকিৎসকদের তৃণমূলপন্থী সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ এর তরফে সাক্ষীগোপাল সাহা বলেন, ‘‘আমরাও চিন্তিত। মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব।’’