প্রতীকী চিত্র।
হার না মানা মানসিকতায় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে জয় হল মোবাইলের ক্রেতা এক ব্যবসায়ীর। যদিও রায়ের পরে বিক্রেতা জাতীয় আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাতেও অবশ্য মামলার শেষ দেখার লড়াইয়ে রাজি মামলাকারী।
২০১৭ সালের এপ্রিলে হাওড়ার জি টি রোডের একটি দোকান থেকে ছ’হাজার ছ’শো টাকায় একটি মোবাইল কিনেছিলেন হাওড়ার মহেন্দ্র রায় লেনের বাসিন্দা গৌতম প্রামাণিক। কেনার এক মাসের মধ্যেই বিকল হয়ে গিয়েছিল সেটি। মোবাইল কেনার এক বছরের মধ্যে কোনও গলদ ধরা পড়লে তার সব দায় দোকানের, এমনই শর্ত ছিল। সেই মতো মোবাইলটি বদলে দিতে দোকানদারকে বার বার আবেদন করেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ গৌতমবাবুর। ওই বছরই তিনি হাওড়া জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরের বছর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ওই মামলা খারিজ করে দেয়। গৌতমবাবুর আইনজীবী রূপালি চক্রবর্তী বলেন, “মোবাইল সারিয়ে দিতে অথবা পরিবর্তে নতুন মোবাইল দিতে বার বার অনুরোধ করা হলেও আমার মক্কেলের সঙ্গে অত্যন্ত বাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে তিনি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন।”
মামলা খারিজ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর জানিয়েছিল, মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থাকে মামলায় ‘পার্টি’ না করাই এর অন্যতম কারণ।
জেলা আদালতে হেরে গেলেও মামলাকারী রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। বিচারক শ্যামল গুপ্ত গত ১৫ অক্টোবর তাঁর রায়ে জি টি রোডের ওই দোকানদারের সমালোচনা করে বলেন, “যে দোকান থেকে মোবাইলটি কেনা হয়েছিল সেই দোকানের মালিক বা ডিলার এ ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র দায় এড়াতে পারেন না। ওই মোবাইল সারাই বা নতুন মোবাইল দিতে দায়বদ্ধ দোকানটি।” পাশাপাশি এই রায় বেরোনোর দেড় মাসের মধ্যে দোকানের মালিককে মোবাইলের দাম-সহ পনেরো হাজার টাকা মামলাকারীকে দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
দোকানের ম্যানেজার আরমান আলি বলেন, “রাজ্য আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে শীঘ্রই মামলা করব।” এ দিকে গৌতমবাবু বলছেন, “মোবাইল কিনতে গিয়ে দোকান মালিক ও তাঁর প্রতিনিধিদের কাছে অপমানিত হয়েছি। এই মামলায় যত দূর যেতে হয় যাব।”