নিজস্ব চিত্র।
মেট্রোর দুর্ঘটনার পরে পেরিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত বুঝেই উঠতে পারছেন না, কেন এসি কামরা সুড়ঙ্গের মধ্যে লাইনচ্যুত হয়েছিল।
মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘ট্রেনের কামরা কী কারণে বেলাইন হল সে বিষয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ওই কমিটি রিপোর্ট দিলে পুরো বিষয়টি জানা যাবে।’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথমে শ্যামবাজারে একটি আত্মহত্যার ঘটনা, পরে পরপর দু’টি যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটে। সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে পয়েন্ট বিকল এবং ময়দানে একটি বাতানুকূল খালি রেক লাইনচ্যুত হয়। ওই তিনটি ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবার কার্যত দফারফা হয়ে যায়। অসংখ্য নিত্যযাত্রীকে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়তে হয়।
ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে মেট্রোকর্তারা তড়িঘড়ি পৌঁছন ময়দান স্টেশনে। শুরু হয় মেরামতি। রাত তিনটে পর্যন্ত সেই কাজ চলে। তার পরে ওই লাইনে ট্রেন চালিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। বুধবার সকাল থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে মেট্রো পরিষেবা শুরু করা গিয়েছে।
মেট্রো কর্তাদের একাংশ বলছেন, সেন্ট্রাল এবং ময়দান স্টেশনে আপৎকালীন ভিত্তিতে ট্রেন ঘুরিয়ে অন্য লাইনে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ‘ওয়াই-সাইডিং’ আছে। এগুলি প্রতিদিনের পরিষেবায় লাগে না। ফলে এই লাইনগুলিতে নিয়মিত মেরামতি হয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্যামবাজার ও সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে দু’টি ঘটনার পরে সুড়ঙ্গের মধ্যে বিভিন্ন স্টেশনে ডাউন ও আপ লাইনের অনেক ট্রেন আটকে গিয়েছিল। ফলে প্রান্তিক স্টেশনগুলি থেকে রেকের অভাবের জন্য ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়েছিল। এই অভাব পূরণ করতেই খালি এসি রেকটিকে ময়দান স্টেশন থেকে ঘুরিয়ে দমদমের দিকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেল কর্তাদের কেউ কেউ মনে করছেন, ময়দানের ওই ওয়াই সাইডিং-এর পয়েন্টের কাছে মেরামতি না হওয়ায় রেল লাইন সম্ভবত বেশি ক্ষয়ে ছুঁচলো হয়ে গিয়েছিল। তাতেই পয়েন্ট সেট হওয়ার পরেও ফাঁক থেকে গিয়েছিল। ওই ফাঁক থাকার ফলে প্রথম কামরা চলে গেলেও পরের কামরার চাকা ফাঁকে আটকে পড়ে যায়। রেলের পরিষেবায় এই রকম পয়েন্টের অবস্থানকে ‘টু-রুট’ বলে। ‘টু-রুট’ হয়ে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন রেলের কর্তারা।